০১:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশ-চীন দুই সমঝোতা স্মারক সই

  • Reporter Name
  • Update Time : ১০:০৬:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫
  • ২৯ Time View

বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে অবাধ বাণিজ্য প্রসারে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন ও ই-কমার্স বিষয়ে সহযোগিতা সংক্রান্ত দুটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে।

সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ও চীনের পক্ষে সে দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও স্বাক্ষর করেন।

ওয়াং ওয়েনতাও চীনের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের একটি দল নিয়ে শনিবার দুপুরে তিন দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছান।

এরপর বিকালে ঢাকার একটি হোটেলে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বৈঠকে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে কৃষিখাতে ড্রোন প্রযুক্তির সহায়তা চেয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা জোরদার করতে এই সহায়তা কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলেও তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে সার, বীজ বপন,কীটনাশক ছিটানো ও ফসল নিরীক্ষণে বিপ্লব আনা সম্ভব। চীনের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তি বাংলাদেশের কৃষিখাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।”

বাংলাদেশের সাথে প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ সহযোগিতা বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “চীন কৃষি ও ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে প্রস্তুত। বিশেষ করে স্মার্ট কৃষি ও ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে আমরা সহযোগিতা করতে পারি।”

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রসীমা থাকলেও আধুনিক মাছ ধরার জাহাজ ও প্রযুক্তির অভাবে এই খাতের পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। চীনের সহায়তায় গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা ও প্রক্রিয়াকরণের সুযোগ বাড়লে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পাবে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।”

মাছ ধরার জাহাজ ও প্রযুক্তি সহায়তার আহ্বান জানিয়ে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “সামুদ্রিক মৎস্য খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশের জন্য অত্যাধুনিক মাছ ধরার জাহাজ ও মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ প্রযুক্তি প্রয়োজন। চীনের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা আমাদের এই খাতকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।

“বাংলাদেশ এখন জনসংখ্যাগত সুবিধায় আছে। এখানে তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যে শ্রমিক পাওয়া যায়। এখানকার শ্রমিকরা দক্ষ ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হওয়ায় তারা দ্রুত ও ভালো কাজ করতে পারে। আসুন এদেশে বিনিয়োগ করুন এবং উভয় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সাহায্য করুন।”

এসময় তিনি চামড়াজাত শিল্প, হালকা প্রকৌশল, কৃষি যন্ত্রপাতি ও কৃষি প্রযুক্তি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও ঔষধ শিল্পে চীনের বিনিয়োগের প্রত্যাশা করেন।

চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের সাথে মৎস্য ও সমুদ্রসম্পদ খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “চীন বাংলাদেশের মৎস্য খাত ও সমুদ্রসীমার সম্পদ আহরণে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রস্তুত।”

চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ ও চীনের কুটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তি ইতোমধ্যে পার হয়েছে। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন বিশেষ করে এদেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে চীন সরকার বেশ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে-যার সুফল এদেশের জনগণ ভোগ করছে।”

বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি খাতে আরও সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।

বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলে ছিলেন বাণিজ্য সচিব, শিল্প সচিব, কৃষি সচিব ও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান।

অপরদিকে, চীনের প্রতিনিধিদলে ছিলেন বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাইরেক্টর জেনারেল অব আউটওয়ার্ড ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাইরেক্টর জেনারেল অব দ্য ডিপার্টমেন্ট অব এশিয়ান অ্যাফেয়ার্স।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Khaled Hossain

জনপ্রিয় খবর

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিনে, শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের শুভেচ্ছা

বাংলাদেশ-চীন দুই সমঝোতা স্মারক সই

Update Time : ১০:০৬:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫

বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে অবাধ বাণিজ্য প্রসারে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন ও ই-কমার্স বিষয়ে সহযোগিতা সংক্রান্ত দুটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে।

সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ও চীনের পক্ষে সে দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও স্বাক্ষর করেন।

ওয়াং ওয়েনতাও চীনের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের একটি দল নিয়ে শনিবার দুপুরে তিন দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছান।

এরপর বিকালে ঢাকার একটি হোটেলে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বৈঠকে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে কৃষিখাতে ড্রোন প্রযুক্তির সহায়তা চেয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা জোরদার করতে এই সহায়তা কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলেও তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে সার, বীজ বপন,কীটনাশক ছিটানো ও ফসল নিরীক্ষণে বিপ্লব আনা সম্ভব। চীনের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তি বাংলাদেশের কৃষিখাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।”

বাংলাদেশের সাথে প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ সহযোগিতা বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “চীন কৃষি ও ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে প্রস্তুত। বিশেষ করে স্মার্ট কৃষি ও ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে আমরা সহযোগিতা করতে পারি।”

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রসীমা থাকলেও আধুনিক মাছ ধরার জাহাজ ও প্রযুক্তির অভাবে এই খাতের পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। চীনের সহায়তায় গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা ও প্রক্রিয়াকরণের সুযোগ বাড়লে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পাবে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।”

মাছ ধরার জাহাজ ও প্রযুক্তি সহায়তার আহ্বান জানিয়ে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “সামুদ্রিক মৎস্য খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশের জন্য অত্যাধুনিক মাছ ধরার জাহাজ ও মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ প্রযুক্তি প্রয়োজন। চীনের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা আমাদের এই খাতকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।

“বাংলাদেশ এখন জনসংখ্যাগত সুবিধায় আছে। এখানে তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যে শ্রমিক পাওয়া যায়। এখানকার শ্রমিকরা দক্ষ ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হওয়ায় তারা দ্রুত ও ভালো কাজ করতে পারে। আসুন এদেশে বিনিয়োগ করুন এবং উভয় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সাহায্য করুন।”

এসময় তিনি চামড়াজাত শিল্প, হালকা প্রকৌশল, কৃষি যন্ত্রপাতি ও কৃষি প্রযুক্তি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও ঔষধ শিল্পে চীনের বিনিয়োগের প্রত্যাশা করেন।

চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের সাথে মৎস্য ও সমুদ্রসম্পদ খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “চীন বাংলাদেশের মৎস্য খাত ও সমুদ্রসীমার সম্পদ আহরণে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রস্তুত।”

চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ ও চীনের কুটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তি ইতোমধ্যে পার হয়েছে। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন বিশেষ করে এদেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে চীন সরকার বেশ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে-যার সুফল এদেশের জনগণ ভোগ করছে।”

বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি খাতে আরও সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।

বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলে ছিলেন বাণিজ্য সচিব, শিল্প সচিব, কৃষি সচিব ও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান।

অপরদিকে, চীনের প্রতিনিধিদলে ছিলেন বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাইরেক্টর জেনারেল অব আউটওয়ার্ড ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাইরেক্টর জেনারেল অব দ্য ডিপার্টমেন্ট অব এশিয়ান অ্যাফেয়ার্স।