০১:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাসপাতালে নারী চিকিৎসককে পেটালেন রোগীর স্বজনরা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৭:১৩:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫
  • ২০ Time View

পাবনা সদর হাসপাতালে এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে রোগীর স্বজনদের বিরুদ্ধে। রোগীর মৃত্যুর পর ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তুলে তারা চিকিৎসককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। সোমবার (২১ জুলাই) দিবাগত রাত ২টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। পুরো ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে রয়েছে।

জানা যায়, সেদিন রাতে সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা বাশের হাসান (৪৫) নামে এক রোগী ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। হঠাৎ করে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে স্বজনরা চিকিৎসকের খোঁজে ছুটতে থাকেন। এ সময় নিচতলার মেডিসিন ওয়ার্ডে নাইট ডিউটিতে থাকা ওই ইন্টার্ন চিকিৎসক দ্রুত দোতলায় গিয়ে রোগীকে দেখতে শুরু করেন।

চিকিৎসা চলাকালে রোগীর এক আত্মীয় চিকিৎসকের ভিডিও ধারণ করতে থাকেন। বিষয়টি লক্ষ করে চিকিৎসক তাকে ভিডিও বন্ধ করতে অনুরোধ করেন এবং ফোনটি সরাতে গেলে সেটি মেঝেতে পড়ে যায়। এতে তিনি উত্তেজিত হয়ে চিকিৎসকের ওপর চড়াও হন এবং ধাক্কা দিয়ে মারধর শুরু করেন। পরিস্থিতি খারাপ দেখে চিকিৎসক পাশের ওয়ার্ডে আশ্রয় নেন, কিন্তু সেখান থেকেও টেনে বের করে আবারও মারধর করা হয়।

এই সময়েও রোগী জীবিত ছিলেন। তবে কিছুক্ষণ পর তিনি মারা যান। পরে রোগীর স্বজনরা দাবি করেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মরদেহ হস্তান্তর করছে না। এতে তারা ফের উত্তেজিত হয়ে হট্টগোল শুরু করেন। এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলা ও উত্তেজনার কারণে কর্তব্যরতরা কাজ করতে সমস্যায় পড়েন, যার ফলে লাশ হস্তান্তরে কিছুটা বিলম্ব হয়।

এই ঘটনার পর পুরো হাসপাতালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নিরাপত্তার জন্য অন্যান্য চিকিৎসকরা কোয়ার্টার থেকে ছুটে আসেন। পরে পুলিশ ও সিনিয়র চিকিৎসকরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. জাহিদ বলেন, ‘রোগীর অবস্থা শুনে সঙ্গে সঙ্গেই ইন্টার্ন চিকিৎসক চিকিৎসা দিতে ছুটে গিয়েছিলেন। পুরো ঘটনাটি সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে। আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’

এ বিষয়ে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম বলেন, ‘দুই পক্ষ থেকেই বিষয়টি আমাদের জানানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

News Editor

জনপ্রিয় খবর

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিনে, শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের শুভেচ্ছা

হাসপাতালে নারী চিকিৎসককে পেটালেন রোগীর স্বজনরা

Update Time : ০৭:১৩:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫

পাবনা সদর হাসপাতালে এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে রোগীর স্বজনদের বিরুদ্ধে। রোগীর মৃত্যুর পর ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তুলে তারা চিকিৎসককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। সোমবার (২১ জুলাই) দিবাগত রাত ২টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। পুরো ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে রয়েছে।

জানা যায়, সেদিন রাতে সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা বাশের হাসান (৪৫) নামে এক রোগী ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। হঠাৎ করে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে স্বজনরা চিকিৎসকের খোঁজে ছুটতে থাকেন। এ সময় নিচতলার মেডিসিন ওয়ার্ডে নাইট ডিউটিতে থাকা ওই ইন্টার্ন চিকিৎসক দ্রুত দোতলায় গিয়ে রোগীকে দেখতে শুরু করেন।

চিকিৎসা চলাকালে রোগীর এক আত্মীয় চিকিৎসকের ভিডিও ধারণ করতে থাকেন। বিষয়টি লক্ষ করে চিকিৎসক তাকে ভিডিও বন্ধ করতে অনুরোধ করেন এবং ফোনটি সরাতে গেলে সেটি মেঝেতে পড়ে যায়। এতে তিনি উত্তেজিত হয়ে চিকিৎসকের ওপর চড়াও হন এবং ধাক্কা দিয়ে মারধর শুরু করেন। পরিস্থিতি খারাপ দেখে চিকিৎসক পাশের ওয়ার্ডে আশ্রয় নেন, কিন্তু সেখান থেকেও টেনে বের করে আবারও মারধর করা হয়।

এই সময়েও রোগী জীবিত ছিলেন। তবে কিছুক্ষণ পর তিনি মারা যান। পরে রোগীর স্বজনরা দাবি করেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মরদেহ হস্তান্তর করছে না। এতে তারা ফের উত্তেজিত হয়ে হট্টগোল শুরু করেন। এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলা ও উত্তেজনার কারণে কর্তব্যরতরা কাজ করতে সমস্যায় পড়েন, যার ফলে লাশ হস্তান্তরে কিছুটা বিলম্ব হয়।

এই ঘটনার পর পুরো হাসপাতালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নিরাপত্তার জন্য অন্যান্য চিকিৎসকরা কোয়ার্টার থেকে ছুটে আসেন। পরে পুলিশ ও সিনিয়র চিকিৎসকরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. জাহিদ বলেন, ‘রোগীর অবস্থা শুনে সঙ্গে সঙ্গেই ইন্টার্ন চিকিৎসক চিকিৎসা দিতে ছুটে গিয়েছিলেন। পুরো ঘটনাটি সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে। আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’

এ বিষয়ে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম বলেন, ‘দুই পক্ষ থেকেই বিষয়টি আমাদের জানানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’