০১:২৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

একের পর এক ফ্লাইটে ত্রুটি: ‘চ্যালেঞ্জে’ বিমান বাংলাদেশ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:২৯:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫
  • ১১ Time View

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের নিরবচ্ছিন্ন ফ্লাইট পরিচালনায় একের পর এক যান্ত্রিক ত্রুটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি দুর্ঘটনা ও ত্রুটির কারণে শুধু যাত্রীদের দুর্ভোগই বাড়ছে না, ক্ষতির মুখে পড়ছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এই সংস্থাটিও। সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা, এর ফলে দেশি-বিদেশি যাত্রীদের আস্থার জায়গাতেও চিড় ধরতে সময় লাগবে না এবং নিয়মিত যাত্রীরাও বিমুখ হয়ে পড়বেন। তবে বিমান কর্তৃপক্ষ বলছে, সম্প্রতি এসব ঘটনায় যাত্রীদের নিরাপত্তায় কোনও ঘাটতি রাখা হচ্ছে না। আর এতে বিমানের টিকিট বিক্রিতে কোনও প্রভাব পড়েনি। শিগগিরই নতুন চারটি এয়ারক্রাফ্ট যুক্ত হবে বিমানের বহরে। এরপর আর কোনও সমস্যা থাকবে না। 

সবশেষ ঘটনা ঘটে গত বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে, যখন দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানের একটি বোয়িং-৭৮৭ উড়োজাহাজের চাকা ফেটে যায়। এতে ঢাকাগামী বিজি-১৪৮ ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে আসতে পারেনি, চরম দুর্ভোগে পড়েন ২২০ যাত্রী। বিমান সূত্র জানায়, বিজি-১৪৮ ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে সুষ্ঠুভাবেই দুবাই পৌঁছায় এবং যাত্রীরাও নিরাপদে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। কিন্তু উড়োজাহাজটি পার্কিং স্ট্যান্ডে প্রবেশের পরই দেখা যায় এর মেইন হুইল ফেটে গেছে। দ্রুত সেটি প্রতিস্থাপন না করলে উড়োজাহাজ উড্ডয়ন সম্ভব নয়।

স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন এয়ারলাইনসের কাছে চাকা খোঁজ করেও না পেয়ে বিপাকে পড়ে বিমান কর্তৃপক্ষ। অতিরিক্ত কোনও উড়োজাহাজ না থাকায় বিকল্প ফ্লাইট পাঠানোর সুযোগও ছিল না। ফলে যাত্রীদের হোটেলে রাখা হয় এবং বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে নতুন চাকা পাঠানো হয়। সেটি প্রতিস্থাপন শেষে আজ ফ্লাইটটি ঢাকায় ফিরে এসেছে।

এভিয়েশন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চাহিদা থাকা সত্ত্বেও বিমানের বহরে পর্যাপ্ত উড়োজাহাজ না থাকায় সব রুটে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে না। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ক্রমাগত যান্ত্রিক ত্রুটি, যা এয়ারলাইনসটির আর্থিক ক্ষতি আরও বাড়িয়ে তুলছে।

এই মাসেই বেশ কয়েকটি যান্ত্রিক ত্রুটির ঘটনা ঘটেছে। ২৭ জুন ঢাকা থেকে ব্যাংককগামী বিজি-৩৮৮ ফ্লাইট যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে পাঁচ ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়ে যায়। এরপর ৫ জুলাই সুবর্ণভূমি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকাগামী বিজি-৩৮৯ ফ্লাইট উড্ডয়নের কিছুক্ষণ আগে হঠাৎ বাতিল করা হয়। বিমান কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের পরদিন আসতে বললেও কোনও কারণ জানানো হয়নি।

ওই দিনই মদিনা থেকে চট্টগ্রামে আসা বিজি-১৩৮ ফ্লাইট শাহ আমানত বিমানবন্দরে অবতরণের পর রানওয়ের এক প্রান্তে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আটকে পড়ে।

এর আগে, ৩ জুলাই কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করার পর একটি ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজ রানওয়েতে আটকে যায়। পরে পুশ কার্ট দিয়ে সেটিকে সরিয়ে নেওয়া হয়। পরদিন ঢাকায় ফিরিয়ে আনার পর তাতে নোজ ল্যান্ডিং গিয়ার লকসহ আরও কিছু ত্রুটি পাওয়া যায়।

এছাড়া, কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী বিজি-৪৩৬ ফ্লাইট উড্ডয়নের পর একটি চাকা খুলে নিচে পড়ে যায়—যা ছিল আরেকটি গুরুতর ত্রুটি। এসব ঘটনার পাশাপাশি উড়োজাহাজ সংকটের কারণে নিয়মিত রুটগুলোতেও ফ্লাইট পরিচালনায় হিমশিম খেতে হচ্ছে বিমানকে। ফলে অনেক রুটে ফ্লাইট কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

দুবাইয়ের ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক এবিএম রওশন কবীর জানান, ‘হুইল ফেটে যাওয়ার কারণে নির্ধারিত ফ্লাইট পরিচালনা সম্ভব হয়নি। পরদিন নতুন হুইল পাঠানো হয়েছে এবং শুক্রবার দুপুরে ফ্লাইটটি ঢাকায় পৌঁছাবে। যাত্রীদের স্থানীয় হোটেলে রাখা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অনেক সময় উচ্চ তাপমাত্রার কারণেও হুইল ফেটে যেতে পারে।’

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ভবিষ্যৎ কার্যক্রম ও যাত্রীসেবায় আস্থা ফিরিয়ে আনতে এখন জরুরি হয়ে উঠেছে কার্যকর রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থাপনা ও বহর সম্প্রসারণ। নতুবা অব্যাহত ত্রুটির এই ধারা প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তিকে আরও সংকটের মুখে ফেলতে পারে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, আমরা যাত্রীদের সেফটি এবং সিকিউরিটির কথা চিন্তা করেই যেকোনও সমস্যা হলে সেটি শতভাগ সম্পন্ন না করে ফ্লাই করছি না। আমাদের দক্ষ মেইনটেনেন্স টিম এয়ারক্রাফটের যেকোনও সমস্যা হলে সেগুলো দ্রুত ঠিক করছেন। 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা দুটি এয়ারক্রাফট লিজ ও দুটি কেনার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছি। লিজ হয়তো দ্রুতই হয়ে যাবে, আর কেনাতে সময় লাগবে। নতুন দুটি সংযোজন হলে এই সমস্যা থাকবে না। আর যে সমস্যাগুলো হচ্ছে, তাতে বিমানের টিকিট বিক্রিতে কোনও প্রভাব পড়েনি।’

তিনি বলেন, ‘এয়ারক্রাফটে কোনও সমস্যা হলে আন্তর্জাতিক নিয়মেই সবকিছু পরিচালিত হয়। ৭ ঘণ্টার বেশি সময় ডিলে হলে যাত্রীদের হোটেলে রাখা, খাবার সরবরাহ করার যে নিয়ম আছে, সেগুলো আমরা পালন করি।’

একের পর এক বিমানের উড়োজাহাজে এমন যান্ত্রিক ত্রুটির ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ধারাবাহিক এই ঘটনাগুলো বিমানের ইমেজ ক্ষুণ্ণ করছে। বাজারে তাদের এমনিতেই ইমেজ সংকট রয়েছে। তার ওপর ধারাবাহিক এই ঘটনাগুলোতে যাত্রীদের ওপর একটি প্রভাব পড়ছে।’

তিনি বলেন, ‘বিমানের এয়ারক্রাফ্টগুলো অনেক পুরাতন হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে নানা ধরনের ত্রুটি বিচ্যুতি দেখা দিচ্ছে। এ কারণে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে যাত্রীরা। এই মুহূর্তে বিমানের উচিত হবে নতুন এয়ারক্রাফ্ট তাদের বহরে যুক্ত করা। নতুবা ঘটনা ঘটতেই থাকবে এবং বাজারে এর প্রভাব আরও বিস্তার হবে। বিমানের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ দক্ষ। তারা বারবার চেষ্টা করেই ত্রুটি সারানোর কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু যেহেতু এয়ারক্রাফটগুলো দীর্ঘদিনের পুরাতন হয়ে যাচ্ছে, সেহেতু বারবারই এই সমস্যা দেখা দেবে। তাই বিমানে ব্যবস্থাপনার উচিত এখনই এই সমস্যার সমাধান করে নতুন নতুন রুট চিন্তা করে সেগুলো বাস্তবায়নে মনোযোগী হওয়া।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

News Editor

জনপ্রিয় খবর

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিনে, শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের শুভেচ্ছা

একের পর এক ফ্লাইটে ত্রুটি: ‘চ্যালেঞ্জে’ বিমান বাংলাদেশ

Update Time : ০২:২৯:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের নিরবচ্ছিন্ন ফ্লাইট পরিচালনায় একের পর এক যান্ত্রিক ত্রুটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি দুর্ঘটনা ও ত্রুটির কারণে শুধু যাত্রীদের দুর্ভোগই বাড়ছে না, ক্ষতির মুখে পড়ছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এই সংস্থাটিও। সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা, এর ফলে দেশি-বিদেশি যাত্রীদের আস্থার জায়গাতেও চিড় ধরতে সময় লাগবে না এবং নিয়মিত যাত্রীরাও বিমুখ হয়ে পড়বেন। তবে বিমান কর্তৃপক্ষ বলছে, সম্প্রতি এসব ঘটনায় যাত্রীদের নিরাপত্তায় কোনও ঘাটতি রাখা হচ্ছে না। আর এতে বিমানের টিকিট বিক্রিতে কোনও প্রভাব পড়েনি। শিগগিরই নতুন চারটি এয়ারক্রাফ্ট যুক্ত হবে বিমানের বহরে। এরপর আর কোনও সমস্যা থাকবে না। 

সবশেষ ঘটনা ঘটে গত বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে, যখন দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানের একটি বোয়িং-৭৮৭ উড়োজাহাজের চাকা ফেটে যায়। এতে ঢাকাগামী বিজি-১৪৮ ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে আসতে পারেনি, চরম দুর্ভোগে পড়েন ২২০ যাত্রী। বিমান সূত্র জানায়, বিজি-১৪৮ ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে সুষ্ঠুভাবেই দুবাই পৌঁছায় এবং যাত্রীরাও নিরাপদে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। কিন্তু উড়োজাহাজটি পার্কিং স্ট্যান্ডে প্রবেশের পরই দেখা যায় এর মেইন হুইল ফেটে গেছে। দ্রুত সেটি প্রতিস্থাপন না করলে উড়োজাহাজ উড্ডয়ন সম্ভব নয়।

স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন এয়ারলাইনসের কাছে চাকা খোঁজ করেও না পেয়ে বিপাকে পড়ে বিমান কর্তৃপক্ষ। অতিরিক্ত কোনও উড়োজাহাজ না থাকায় বিকল্প ফ্লাইট পাঠানোর সুযোগও ছিল না। ফলে যাত্রীদের হোটেলে রাখা হয় এবং বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে নতুন চাকা পাঠানো হয়। সেটি প্রতিস্থাপন শেষে আজ ফ্লাইটটি ঢাকায় ফিরে এসেছে।

এভিয়েশন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চাহিদা থাকা সত্ত্বেও বিমানের বহরে পর্যাপ্ত উড়োজাহাজ না থাকায় সব রুটে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে না। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ক্রমাগত যান্ত্রিক ত্রুটি, যা এয়ারলাইনসটির আর্থিক ক্ষতি আরও বাড়িয়ে তুলছে।

এই মাসেই বেশ কয়েকটি যান্ত্রিক ত্রুটির ঘটনা ঘটেছে। ২৭ জুন ঢাকা থেকে ব্যাংককগামী বিজি-৩৮৮ ফ্লাইট যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে পাঁচ ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়ে যায়। এরপর ৫ জুলাই সুবর্ণভূমি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকাগামী বিজি-৩৮৯ ফ্লাইট উড্ডয়নের কিছুক্ষণ আগে হঠাৎ বাতিল করা হয়। বিমান কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের পরদিন আসতে বললেও কোনও কারণ জানানো হয়নি।

ওই দিনই মদিনা থেকে চট্টগ্রামে আসা বিজি-১৩৮ ফ্লাইট শাহ আমানত বিমানবন্দরে অবতরণের পর রানওয়ের এক প্রান্তে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আটকে পড়ে।

এর আগে, ৩ জুলাই কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করার পর একটি ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজ রানওয়েতে আটকে যায়। পরে পুশ কার্ট দিয়ে সেটিকে সরিয়ে নেওয়া হয়। পরদিন ঢাকায় ফিরিয়ে আনার পর তাতে নোজ ল্যান্ডিং গিয়ার লকসহ আরও কিছু ত্রুটি পাওয়া যায়।

এছাড়া, কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী বিজি-৪৩৬ ফ্লাইট উড্ডয়নের পর একটি চাকা খুলে নিচে পড়ে যায়—যা ছিল আরেকটি গুরুতর ত্রুটি। এসব ঘটনার পাশাপাশি উড়োজাহাজ সংকটের কারণে নিয়মিত রুটগুলোতেও ফ্লাইট পরিচালনায় হিমশিম খেতে হচ্ছে বিমানকে। ফলে অনেক রুটে ফ্লাইট কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

দুবাইয়ের ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক এবিএম রওশন কবীর জানান, ‘হুইল ফেটে যাওয়ার কারণে নির্ধারিত ফ্লাইট পরিচালনা সম্ভব হয়নি। পরদিন নতুন হুইল পাঠানো হয়েছে এবং শুক্রবার দুপুরে ফ্লাইটটি ঢাকায় পৌঁছাবে। যাত্রীদের স্থানীয় হোটেলে রাখা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অনেক সময় উচ্চ তাপমাত্রার কারণেও হুইল ফেটে যেতে পারে।’

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ভবিষ্যৎ কার্যক্রম ও যাত্রীসেবায় আস্থা ফিরিয়ে আনতে এখন জরুরি হয়ে উঠেছে কার্যকর রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থাপনা ও বহর সম্প্রসারণ। নতুবা অব্যাহত ত্রুটির এই ধারা প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তিকে আরও সংকটের মুখে ফেলতে পারে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, আমরা যাত্রীদের সেফটি এবং সিকিউরিটির কথা চিন্তা করেই যেকোনও সমস্যা হলে সেটি শতভাগ সম্পন্ন না করে ফ্লাই করছি না। আমাদের দক্ষ মেইনটেনেন্স টিম এয়ারক্রাফটের যেকোনও সমস্যা হলে সেগুলো দ্রুত ঠিক করছেন। 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা দুটি এয়ারক্রাফট লিজ ও দুটি কেনার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছি। লিজ হয়তো দ্রুতই হয়ে যাবে, আর কেনাতে সময় লাগবে। নতুন দুটি সংযোজন হলে এই সমস্যা থাকবে না। আর যে সমস্যাগুলো হচ্ছে, তাতে বিমানের টিকিট বিক্রিতে কোনও প্রভাব পড়েনি।’

তিনি বলেন, ‘এয়ারক্রাফটে কোনও সমস্যা হলে আন্তর্জাতিক নিয়মেই সবকিছু পরিচালিত হয়। ৭ ঘণ্টার বেশি সময় ডিলে হলে যাত্রীদের হোটেলে রাখা, খাবার সরবরাহ করার যে নিয়ম আছে, সেগুলো আমরা পালন করি।’

একের পর এক বিমানের উড়োজাহাজে এমন যান্ত্রিক ত্রুটির ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ধারাবাহিক এই ঘটনাগুলো বিমানের ইমেজ ক্ষুণ্ণ করছে। বাজারে তাদের এমনিতেই ইমেজ সংকট রয়েছে। তার ওপর ধারাবাহিক এই ঘটনাগুলোতে যাত্রীদের ওপর একটি প্রভাব পড়ছে।’

তিনি বলেন, ‘বিমানের এয়ারক্রাফ্টগুলো অনেক পুরাতন হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে নানা ধরনের ত্রুটি বিচ্যুতি দেখা দিচ্ছে। এ কারণে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে যাত্রীরা। এই মুহূর্তে বিমানের উচিত হবে নতুন এয়ারক্রাফ্ট তাদের বহরে যুক্ত করা। নতুবা ঘটনা ঘটতেই থাকবে এবং বাজারে এর প্রভাব আরও বিস্তার হবে। বিমানের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ দক্ষ। তারা বারবার চেষ্টা করেই ত্রুটি সারানোর কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু যেহেতু এয়ারক্রাফটগুলো দীর্ঘদিনের পুরাতন হয়ে যাচ্ছে, সেহেতু বারবারই এই সমস্যা দেখা দেবে। তাই বিমানে ব্যবস্থাপনার উচিত এখনই এই সমস্যার সমাধান করে নতুন নতুন রুট চিন্তা করে সেগুলো বাস্তবায়নে মনোযোগী হওয়া।’