১১:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সমালোচনার মুখে দুই মুক্তিযোদ্ধার নামে স্টেডিয়াম ও সুইমিংপুলের নাম পুনর্বহাল

পাবনায় সমালোচনার মুখে শহীদ অ্যাডভোকেট আমিনউদ্দিন স্টেডিয়াম ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল সুইমিংপুলের নাম পুনর্বহাল করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের যুগ্ম সচিব মো. আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। গতকাল বুধবার জারি করা ওই চিঠিতে নাম দুটি পুনর্বহাল করে দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকালে পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়েছি, খুব দ্রুতই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হবে।’

এর আগে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এক নির্দেশনায় দেশের বিভিন্ন জেলার স্টেডিয়াম ও সুইমিংপুলের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। তাতে পাবনার এই দুটি স্থাপনার নাম পরিবর্তন করে শুধু ‘জেলা স্টেডিয়াম’ ও ‘জেলা সুইমিংপুল’ করা হয়। এর প্রতিবাদে পাবনাজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। নাম পুনর্বহালের ঘোষণার আগে সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে মানববন্ধন করে সচেতন নাগরিক সমাজ। কর্মসূচিতে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন। তারা নাম পুনর্বহাল না হলে লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেন।

জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘চিঠি এখনও হাতে পাইনি। তবে ফেসবুকে দেখেছি। চিঠি হাতে পেলেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

নাম পুনর্বহালের খবরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন শহীদ পরিবারের সদস্য, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং পাবনাবাসী। শহীদ আমিনউদ্দিনের ছেলে সদরুল আমিন বলেন, ‘১৯৭১ সালের মতো পাবনার মানুষ আবারও অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। সরকারকে বাধ্য করা হয়েছে শহীদদের সম্মান রক্ষায়।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুলের ছেলে নুর ইসলাম বলেন, ‘নাম পরিবর্তনের ঘটনায় আমরা গভীরভাবে আহত হয়েছিলাম। কর্তৃপক্ষ শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়েছে। আশা করি ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটবে না।’

পাবনা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুর মোহাম্মদ মাসুম বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ জাতির আত্মার অংশ। মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করা মানেই জাতিকে অসম্মান করা। ভবিষ্যতে সরকারকে এমন স্পর্শকাতর বিষয়ে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। সরকারকে এ বিষয়ে আরও সতর্ক থাকতে হবে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Khaled Hossain

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিসিবি পরিচালক আসিফ আকবর

সমালোচনার মুখে দুই মুক্তিযোদ্ধার নামে স্টেডিয়াম ও সুইমিংপুলের নাম পুনর্বহাল

Update Time : ০৫:০৯:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫

পাবনায় সমালোচনার মুখে শহীদ অ্যাডভোকেট আমিনউদ্দিন স্টেডিয়াম ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল সুইমিংপুলের নাম পুনর্বহাল করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের যুগ্ম সচিব মো. আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। গতকাল বুধবার জারি করা ওই চিঠিতে নাম দুটি পুনর্বহাল করে দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকালে পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়েছি, খুব দ্রুতই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হবে।’

এর আগে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এক নির্দেশনায় দেশের বিভিন্ন জেলার স্টেডিয়াম ও সুইমিংপুলের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। তাতে পাবনার এই দুটি স্থাপনার নাম পরিবর্তন করে শুধু ‘জেলা স্টেডিয়াম’ ও ‘জেলা সুইমিংপুল’ করা হয়। এর প্রতিবাদে পাবনাজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। নাম পুনর্বহালের ঘোষণার আগে সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে মানববন্ধন করে সচেতন নাগরিক সমাজ। কর্মসূচিতে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন। তারা নাম পুনর্বহাল না হলে লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেন।

জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘চিঠি এখনও হাতে পাইনি। তবে ফেসবুকে দেখেছি। চিঠি হাতে পেলেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

নাম পুনর্বহালের খবরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন শহীদ পরিবারের সদস্য, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং পাবনাবাসী। শহীদ আমিনউদ্দিনের ছেলে সদরুল আমিন বলেন, ‘১৯৭১ সালের মতো পাবনার মানুষ আবারও অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। সরকারকে বাধ্য করা হয়েছে শহীদদের সম্মান রক্ষায়।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুলের ছেলে নুর ইসলাম বলেন, ‘নাম পরিবর্তনের ঘটনায় আমরা গভীরভাবে আহত হয়েছিলাম। কর্তৃপক্ষ শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়েছে। আশা করি ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটবে না।’

পাবনা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুর মোহাম্মদ মাসুম বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ জাতির আত্মার অংশ। মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করা মানেই জাতিকে অসম্মান করা। ভবিষ্যতে সরকারকে এমন স্পর্শকাতর বিষয়ে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। সরকারকে এ বিষয়ে আরও সতর্ক থাকতে হবে।’