০৭:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাবনার চেতনার সম্পাদক এস এম আদনান উদ্দিনের ফেসবুক পোস্ট ছিলো একটি অপেশাদার আচরণ

তানভির তাহারাত : পাবনার স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা পাবনার চেতনার সম্পাদক এস এম আদনান উদ্দিন সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পাবনার মুখপাত্র তরুণ রাজনীতিবিদ সিরাজুম মুনিরাকে নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। “চাঁদাবাজ সমন্বয়ক : অর্থের লালসায় বিকিয়েছেন সব” শিরোনামের এই পোস্টটি একজন মানবাধিকার ও গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে আমার কাছে অত্যন্ত অপেশাদার, সাংবাদিকতার নীতি বহির্ভূত এবং ব্যক্তিগত আক্রমণ কিংবা বিদ্বেষপ্রসূত মনে হয়েছে।

আদনান উদ্দিন তার পোস্টে সিরাজুম মুনিরার বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার ব্যবহার করে মামলা বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ, পরকীয়া ও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন, বানভাসিদের ত্রাণ সামগ্রী কেনার নামে অর্থ আত্মসাৎ, জমি বিক্রির কথা বলে অর্থ আত্মসাৎ এবং আত্মীয়দের ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ তছরুপের মতো অভিযোগ।

একজন সম্পাদকের এমন ব্যক্তিগত আক্রমণ ও যাচাই-বাছাইবিহীন অভিযোগ প্রকাশ করা সাংবাদিকতার নীতিমালার পরিপন্থী। কোনো সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত না করে এবং অভিযুক্তের বক্তব্য না নিয়ে এমন অভিযোগ প্রকাশ করা দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়। এস এম আদনান উদ্দিনের এই পোস্টটি কেবল সিরাজুম মুনিরাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলেই প্রতীয়মান হয়।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অবশ্যই থাকতে হবে, তবে সেই স্বাধীনতা যেন কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সম্মানহানি কিংবা অপপ্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। এস এম আদনান উদ্দিনের এই পোস্ট সাংবাদিকতার মৌলিক নীতিগুলোর লঙ্ঘন করেছে এবং এর মাধ্যমে তিনি একজন গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে নিজের পেশাদারিত্বের অভাব প্রমাণ করেছেন।

পাবনার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র সিরাজুম মুনিরাকে নিয়ে এস এম আদনান উদ্দিনের পোস্টটি সম্প্রতি ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। যেখানে তিনি সিরাজুম মুনিরা বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগগুলো উত্থাপন করেছেন।

এ বিষয়ে একজন প্রবীণ আইনজীবী জানান, অভিযোগ প্রমাণসাপেক্ষ। প্রমাণ ছাড়া কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করা আইনত অপরাধ। নারী পরিষদের নেতৃবৃন্দও অভিযোগের যথার্থ প্রমাণ চেয়েছেন। তাঁদের মতে, অভিযোগগুলো শুধু সিরাজুম মুনিরা নয়, তার পরিবারকেও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য যথেষ্ট।

সুধী মহল সহ সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া থেকে এটা স্পষ্ট যে, বিষয়টি হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। পাবনার সচেতন মহল এখন এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাচ্ছে। তদন্তে সিরাজুম মুনিরা দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে, অন্যথায় এস এম আদনান উদ্দিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে। আদালত যতক্ষণ পর্যন্ত কাউকে অপরাধী না বলছে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাকে অপরাধী বলার সুযোগ নেই। প্রমাণ ছাড়া সামাজিক মাধ্যমে সম্মানহানি করার অধিকার কারো নেই।

পোস্টের প্রচার করুন

সব প্রতিক্রিয়া:

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Khaled Hossain

জনপ্রিয় খবর

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিনে, শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের শুভেচ্ছা

পাবনার চেতনার সম্পাদক এস এম আদনান উদ্দিনের ফেসবুক পোস্ট ছিলো একটি অপেশাদার আচরণ

Update Time : ১০:১৮:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫

তানভির তাহারাত : পাবনার স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা পাবনার চেতনার সম্পাদক এস এম আদনান উদ্দিন সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পাবনার মুখপাত্র তরুণ রাজনীতিবিদ সিরাজুম মুনিরাকে নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। “চাঁদাবাজ সমন্বয়ক : অর্থের লালসায় বিকিয়েছেন সব” শিরোনামের এই পোস্টটি একজন মানবাধিকার ও গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে আমার কাছে অত্যন্ত অপেশাদার, সাংবাদিকতার নীতি বহির্ভূত এবং ব্যক্তিগত আক্রমণ কিংবা বিদ্বেষপ্রসূত মনে হয়েছে।

আদনান উদ্দিন তার পোস্টে সিরাজুম মুনিরার বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার ব্যবহার করে মামলা বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ, পরকীয়া ও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন, বানভাসিদের ত্রাণ সামগ্রী কেনার নামে অর্থ আত্মসাৎ, জমি বিক্রির কথা বলে অর্থ আত্মসাৎ এবং আত্মীয়দের ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ তছরুপের মতো অভিযোগ।

একজন সম্পাদকের এমন ব্যক্তিগত আক্রমণ ও যাচাই-বাছাইবিহীন অভিযোগ প্রকাশ করা সাংবাদিকতার নীতিমালার পরিপন্থী। কোনো সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত না করে এবং অভিযুক্তের বক্তব্য না নিয়ে এমন অভিযোগ প্রকাশ করা দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়। এস এম আদনান উদ্দিনের এই পোস্টটি কেবল সিরাজুম মুনিরাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলেই প্রতীয়মান হয়।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অবশ্যই থাকতে হবে, তবে সেই স্বাধীনতা যেন কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সম্মানহানি কিংবা অপপ্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। এস এম আদনান উদ্দিনের এই পোস্ট সাংবাদিকতার মৌলিক নীতিগুলোর লঙ্ঘন করেছে এবং এর মাধ্যমে তিনি একজন গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে নিজের পেশাদারিত্বের অভাব প্রমাণ করেছেন।

পাবনার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র সিরাজুম মুনিরাকে নিয়ে এস এম আদনান উদ্দিনের পোস্টটি সম্প্রতি ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। যেখানে তিনি সিরাজুম মুনিরা বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগগুলো উত্থাপন করেছেন।

এ বিষয়ে একজন প্রবীণ আইনজীবী জানান, অভিযোগ প্রমাণসাপেক্ষ। প্রমাণ ছাড়া কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করা আইনত অপরাধ। নারী পরিষদের নেতৃবৃন্দও অভিযোগের যথার্থ প্রমাণ চেয়েছেন। তাঁদের মতে, অভিযোগগুলো শুধু সিরাজুম মুনিরা নয়, তার পরিবারকেও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য যথেষ্ট।

সুধী মহল সহ সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া থেকে এটা স্পষ্ট যে, বিষয়টি হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। পাবনার সচেতন মহল এখন এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাচ্ছে। তদন্তে সিরাজুম মুনিরা দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে, অন্যথায় এস এম আদনান উদ্দিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে। আদালত যতক্ষণ পর্যন্ত কাউকে অপরাধী না বলছে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাকে অপরাধী বলার সুযোগ নেই। প্রমাণ ছাড়া সামাজিক মাধ্যমে সম্মানহানি করার অধিকার কারো নেই।

পোস্টের প্রচার করুন

সব প্রতিক্রিয়া: