০৭:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১৬ বছর পর রেলের জলাভূমি উদ্ধার, স্বস্তি এলাকাবাসীর

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:৩০:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫
  • ১ Time View

দীর্ঘ ১৬ বছর পর পাবনার ভাঙ্গুরা উপজেলার দিলপাশার রেলস্টেশনের পাশের রেলওয়ের প্রায় দেড় একর জলাভূমি দখলমুক্ত হয়েছে। রাজনৈতিক প্রভাবে দীর্ঘদিন ধরে জলাভূমিটি সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত আব্দুল লতিফ মির্জার পরিবারের দখলে ছিল।
জানা যায়, দিলপাশার স্টেশনের সংলগ্ন আরএস দাগ নং ১১০৬-এর ১ দশমিক ৫২ একর রেলওয়ের জলাভূমি ২০০৮ সালের পর থেকে বিভিন্ন সময় লতিফ মির্জার মৃত্যুর পর ভাতিজা মির্জা কে. ই. তুহিনের নামে লিজ নবায়ন করা হয়। অথচ বাংলাদেশ রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা ২০২০ অনুযায়ী রেলের সম্পত্তি উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে লিজ দেওয়ার কথা। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এ নীতিমালা অমান্য করে জলাভূমিটি দীর্ঘদিন একই পরিবারের দখলে ছিল।
গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর সারা দেশে রেলওয়ের সম্পত্তি সংস্কার কার্যক্রম শুরু হলে বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী পুরনো লিজ বাতিল করে নীতিমালা অনুসারে জলাভূমিটি পাশের জমির মালিক আলী আকবরকে চলতি বছরের জন্য লিজ প্রদান করে পাকশী বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি দপ্তর।
তবে এ নিয়ে নতুন করে ১৩ আগস্ট সাবেক এমপি আব্দুল লতিফ মির্জার ভাতিজা মির্জা কে.ই তুহিন পাকশী রেলওয়ে ভূ-সম্পত্তি অফিসে উপস্থিত হয়ে পুনরায় নিজের নামে জলাভূমির বরাদ্দ দেওয়ার জন্য প্রস্তাব করেন। এ সময় তার অনুসারীদের উপস্থিতিতে অফিস প্রাঙ্গণে কিছুটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিও তৈরি হয়।
রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, নীতিমালা অনুযায়ী একই ব্যক্তিকে বছরের পর বছর টেন্ডার ছাড়া বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগ নেই। অতীতে যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল, তা রাজনৈতিক প্রভাবের কারণেই হয়েছিল। বর্তমানে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান ছাড়া কোনো ধরনের লিজ প্রদান করা হবে না।
এরই মধ্যে গত ১৮ আগস্ট জলাভূমি এলাকায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও লিজপ্রাপ্ত আলী আকবর আনুষ্ঠানিকভাবে দখল গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, আমি যেহেতু জলাভূমির পাশের জমির মালিক, তাই নিয়ম মেনে লিজ পেয়েছি। এখন থেকে এলাকার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সমবায় ভিত্তিতে মাছচাষ করা হবে।
স্থানীয় বেলাল হোসেন বলেন দীর্ঘদিন রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জলাভূমিটি ভোগ দখল করলেও এখন নিয়মতান্ত্রিকভাবে তা মুক্ত হয়েছে। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।
এ বিষয়ে পাকসী বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা মোঃ আরিফুল ইসলাম বলেন নিয়ম মেনেই জলমহাল ইজারা দেওয়া হয়েছে, আইনের বাইরে কোনকিছু করা হয়নি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

News Editor

জনপ্রিয় খবর

১৬ বছর পর রেলের জলাভূমি উদ্ধার, স্বস্তি এলাকাবাসীর

Update Time : ০২:৩০:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫

দীর্ঘ ১৬ বছর পর পাবনার ভাঙ্গুরা উপজেলার দিলপাশার রেলস্টেশনের পাশের রেলওয়ের প্রায় দেড় একর জলাভূমি দখলমুক্ত হয়েছে। রাজনৈতিক প্রভাবে দীর্ঘদিন ধরে জলাভূমিটি সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত আব্দুল লতিফ মির্জার পরিবারের দখলে ছিল।
জানা যায়, দিলপাশার স্টেশনের সংলগ্ন আরএস দাগ নং ১১০৬-এর ১ দশমিক ৫২ একর রেলওয়ের জলাভূমি ২০০৮ সালের পর থেকে বিভিন্ন সময় লতিফ মির্জার মৃত্যুর পর ভাতিজা মির্জা কে. ই. তুহিনের নামে লিজ নবায়ন করা হয়। অথচ বাংলাদেশ রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা ২০২০ অনুযায়ী রেলের সম্পত্তি উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে লিজ দেওয়ার কথা। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এ নীতিমালা অমান্য করে জলাভূমিটি দীর্ঘদিন একই পরিবারের দখলে ছিল।
গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর সারা দেশে রেলওয়ের সম্পত্তি সংস্কার কার্যক্রম শুরু হলে বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী পুরনো লিজ বাতিল করে নীতিমালা অনুসারে জলাভূমিটি পাশের জমির মালিক আলী আকবরকে চলতি বছরের জন্য লিজ প্রদান করে পাকশী বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি দপ্তর।
তবে এ নিয়ে নতুন করে ১৩ আগস্ট সাবেক এমপি আব্দুল লতিফ মির্জার ভাতিজা মির্জা কে.ই তুহিন পাকশী রেলওয়ে ভূ-সম্পত্তি অফিসে উপস্থিত হয়ে পুনরায় নিজের নামে জলাভূমির বরাদ্দ দেওয়ার জন্য প্রস্তাব করেন। এ সময় তার অনুসারীদের উপস্থিতিতে অফিস প্রাঙ্গণে কিছুটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিও তৈরি হয়।
রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, নীতিমালা অনুযায়ী একই ব্যক্তিকে বছরের পর বছর টেন্ডার ছাড়া বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগ নেই। অতীতে যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল, তা রাজনৈতিক প্রভাবের কারণেই হয়েছিল। বর্তমানে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান ছাড়া কোনো ধরনের লিজ প্রদান করা হবে না।
এরই মধ্যে গত ১৮ আগস্ট জলাভূমি এলাকায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও লিজপ্রাপ্ত আলী আকবর আনুষ্ঠানিকভাবে দখল গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, আমি যেহেতু জলাভূমির পাশের জমির মালিক, তাই নিয়ম মেনে লিজ পেয়েছি। এখন থেকে এলাকার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সমবায় ভিত্তিতে মাছচাষ করা হবে।
স্থানীয় বেলাল হোসেন বলেন দীর্ঘদিন রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জলাভূমিটি ভোগ দখল করলেও এখন নিয়মতান্ত্রিকভাবে তা মুক্ত হয়েছে। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।
এ বিষয়ে পাকসী বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা মোঃ আরিফুল ইসলাম বলেন নিয়ম মেনেই জলমহাল ইজারা দেওয়া হয়েছে, আইনের বাইরে কোনকিছু করা হয়নি।