০৮:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গোপালগঞ্জে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ রিকশাচালক রমজান মুন্সি মারা গেছেন

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:০৪:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫
  • ১০ Time View

গোপালগঞ্জে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ রিকশাচালক রমজান মুন্সী (৩২) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার দিনগত রাত দুইটার দিকে (১৮ জুলাই) তাকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

রমজানের ভাই ইমরান মুন্সী জানান, গত বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে রমজান অটোরিকশা নিয়ে বের হলে গুলিবিদ্ধ হন। তার ডান হাতের কব্জির ওপর ও ডান বগলে গুলি লাগে। এরপর গুরুতর অবস্থায় প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে, পরে সেখান থেকে তাকে ঢামেকে আনা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে সেখানে তিনি মারা যান।

রমজান মুন্সীর আরেক ভাই হীরা মুন্সী বলেন, “ঘটনার দিন দুপুরে গোপালগঞ্জ শহরের সিনেমা হলের পাশে রিকশা থেকে যাত্রী নামিয়ে ফেরার পথে সংঘর্ষে পড়ে রমজান গুলিবিদ্ধ হন।”

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক বলেন, “গোপালগঞ্জ সদর এলাকা থেকে নিয়ে আসা রমজান মুন্সী চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে মারা গেছেন। তার মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে এবং বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, গোপালগঞ্জ সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ আরও দুজন— সুমন বিশ্বাস (৩০) ও আব্বাস আলী (৩০) ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

গত বুধবার (১৬ জুলাই) গোপালগঞ্জ শহরে এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে ওঠে এলাকা। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হন।

মঙ্গলবার থেকেই গোপালগঞ্জে রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বুধবার সকালে এনসিপি নেতাদের গাড়িবহর শহরে প্রবেশের আগেই পুলিশের গাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে সহিংসতার সূচনা হয়। পরে ইউএনওর গাড়িতেও হামলার ঘটনা ঘটে।

বেলা দেড়টার দিকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পৌরপার্ক এলাকায় এনসিপির সমাবেশ মঞ্চে হামলা চালান। এরপর দুপুর পৌনে ৩টার দিকে শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় গোপালগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে ফের সংঘর্ষ শুরু হয়।

এক পর্যায়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীদের ত্রিমুখী সংঘর্ষে শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। নিরাপত্তার কারণে এনসিপির নেতারা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আশ্রয় নেন এবং পরে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া গাড়িতে করে ওই স্থান ত্যাগ করেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওইদিন দুপুরে ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। সন্ধ্যায় কারফিউ জারি করেও সহিংসতা থামানো যায়নি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

News Editor

জনপ্রিয় খবর

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিনে, শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের শুভেচ্ছা

গোপালগঞ্জে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ রিকশাচালক রমজান মুন্সি মারা গেছেন

Update Time : ০১:০৪:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫

গোপালগঞ্জে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ রিকশাচালক রমজান মুন্সী (৩২) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার দিনগত রাত দুইটার দিকে (১৮ জুলাই) তাকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

রমজানের ভাই ইমরান মুন্সী জানান, গত বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে রমজান অটোরিকশা নিয়ে বের হলে গুলিবিদ্ধ হন। তার ডান হাতের কব্জির ওপর ও ডান বগলে গুলি লাগে। এরপর গুরুতর অবস্থায় প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে, পরে সেখান থেকে তাকে ঢামেকে আনা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে সেখানে তিনি মারা যান।

রমজান মুন্সীর আরেক ভাই হীরা মুন্সী বলেন, “ঘটনার দিন দুপুরে গোপালগঞ্জ শহরের সিনেমা হলের পাশে রিকশা থেকে যাত্রী নামিয়ে ফেরার পথে সংঘর্ষে পড়ে রমজান গুলিবিদ্ধ হন।”

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক বলেন, “গোপালগঞ্জ সদর এলাকা থেকে নিয়ে আসা রমজান মুন্সী চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে মারা গেছেন। তার মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে এবং বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, গোপালগঞ্জ সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ আরও দুজন— সুমন বিশ্বাস (৩০) ও আব্বাস আলী (৩০) ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

গত বুধবার (১৬ জুলাই) গোপালগঞ্জ শহরে এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে ওঠে এলাকা। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হন।

মঙ্গলবার থেকেই গোপালগঞ্জে রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বুধবার সকালে এনসিপি নেতাদের গাড়িবহর শহরে প্রবেশের আগেই পুলিশের গাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে সহিংসতার সূচনা হয়। পরে ইউএনওর গাড়িতেও হামলার ঘটনা ঘটে।

বেলা দেড়টার দিকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পৌরপার্ক এলাকায় এনসিপির সমাবেশ মঞ্চে হামলা চালান। এরপর দুপুর পৌনে ৩টার দিকে শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় গোপালগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে ফের সংঘর্ষ শুরু হয়।

এক পর্যায়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীদের ত্রিমুখী সংঘর্ষে শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। নিরাপত্তার কারণে এনসিপির নেতারা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আশ্রয় নেন এবং পরে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া গাড়িতে করে ওই স্থান ত্যাগ করেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওইদিন দুপুরে ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। সন্ধ্যায় কারফিউ জারি করেও সহিংসতা থামানো যায়নি।