০১:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যেখানে-সেখানে অনুমোদনহীন ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, বাড়ছে সড়ক দূর্ঘটনার ঝুঁকি

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:৩৪:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫
  • ২৩ Time View

পাবনায় ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো গজিয়ে উঠছে ব্যাঙের ছাতার মতো। অথচ বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটি)-এর তথ্য অনুযায়ী, পাবনায় মাত্র দুটি অনুমোদিত ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে—ইছামতী এবং অগ্রণী।

এই দুটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া বিআরটি’র অনুমোদনপ্রাপ্ত আর কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, পাবনার বিভিন্ন উপজেলায় বহু অনুমোদনহীন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে উঠেছে, যেখানে নিয়মবহির্ভূতভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

সুজানগর উপজেলার পদ্মা ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টারের মালিকের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি ২০ দিনের মধ্যে একজন চালক তৈরি করেন এবং তার বিনিময়ে ৮,০০০ টাকা নেন। যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, প্রশিক্ষণের মেয়াদ কত দিন, তিনি বলেন ৩০ দিন।

আর অনুমোদনের কথা জিজ্ঞাসা করতেই স্বীকার করেন, তার প্রতিষ্ঠান বিআরটি’র কোনো অনুমোদন নেয়নি। অথচ প্রথমে তিনি দাবি করেছিলেন, তার প্রতিষ্ঠানে অনুমোদন রয়েছে। এরপর প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমরা কি আর ক্যামেরায় কথা বলতে পারি?” বলেই গাড়ি স্টার্ট দিয়ে দ্রুত সরে পড়েন পাবনা বাসটার্মিনাল এলাকা থেকে।

আটঘরিয়া, একদন্ত, সুজানগরসহ বিভিন্ন স্থানে আরও ৮-১০টি ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও প্রশিক্ষণ গাড়ি দেখা গেছে, যেগুলোর বেশিরভাগই অনুমোদনহীন। কিছু প্রশিক্ষক পেশাদার না হয়ে নিজেরাই অনভিজ্ঞ বা হেলপার থেকে চালক হয়েছেন। মুনসুর আলী ডিগ্রী কলেজের সামনেই মা-ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টারের অফিস দেখা গিয়েছে সাধারণ একটা টিন দিয়ে ঘেরা দোকানের মত।

ফলে তৈরি হচ্ছে অদক্ষ চালক, যারা নিয়ম-কানুন না মেনে রাস্তায় গাড়ি চালাচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোচের হেলপার দুই-চার দিন চালকের পাশে থেকে কিছুটা অভিজ্ঞতা নিয়ে গাড়ি চালানো শুরু করে দেন। পরে তারাই হয়ে ওঠেন হাইওয়ে রোডের ‘চালক’। এসব ‘প্লাস্টিক চালক’ রাস্তায় নামলেই ঘটে দুর্ঘটনা।
সাধারণ মানুষের জীবন ও সম্পদ পড়ছে ঝুঁকিতে।

বিআরটি পাবনা সার্কেলের কর্মকর্তা আলতাব হোসেন বলেন,আমরা এসব অবৈধ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালাবো।কেউ যদি সঠিকভাবে অনুমোদন নিয়ে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালাতে চায়,আমরা তাকে সহায়তা করবো।

দক্ষ চালক তৈরি করতে হলে অনুমোদিত ও মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা জরুরি। তা না হলে সড়কে মৃত্যুর মিছিল বন্ধ হবে না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

News Editor

জনপ্রিয় খবর

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিনে, শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের শুভেচ্ছা

যেখানে-সেখানে অনুমোদনহীন ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, বাড়ছে সড়ক দূর্ঘটনার ঝুঁকি

Update Time : ১২:৩৪:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫

পাবনায় ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো গজিয়ে উঠছে ব্যাঙের ছাতার মতো। অথচ বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটি)-এর তথ্য অনুযায়ী, পাবনায় মাত্র দুটি অনুমোদিত ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে—ইছামতী এবং অগ্রণী।

এই দুটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া বিআরটি’র অনুমোদনপ্রাপ্ত আর কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, পাবনার বিভিন্ন উপজেলায় বহু অনুমোদনহীন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে উঠেছে, যেখানে নিয়মবহির্ভূতভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

সুজানগর উপজেলার পদ্মা ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টারের মালিকের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি ২০ দিনের মধ্যে একজন চালক তৈরি করেন এবং তার বিনিময়ে ৮,০০০ টাকা নেন। যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, প্রশিক্ষণের মেয়াদ কত দিন, তিনি বলেন ৩০ দিন।

আর অনুমোদনের কথা জিজ্ঞাসা করতেই স্বীকার করেন, তার প্রতিষ্ঠান বিআরটি’র কোনো অনুমোদন নেয়নি। অথচ প্রথমে তিনি দাবি করেছিলেন, তার প্রতিষ্ঠানে অনুমোদন রয়েছে। এরপর প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমরা কি আর ক্যামেরায় কথা বলতে পারি?” বলেই গাড়ি স্টার্ট দিয়ে দ্রুত সরে পড়েন পাবনা বাসটার্মিনাল এলাকা থেকে।

আটঘরিয়া, একদন্ত, সুজানগরসহ বিভিন্ন স্থানে আরও ৮-১০টি ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও প্রশিক্ষণ গাড়ি দেখা গেছে, যেগুলোর বেশিরভাগই অনুমোদনহীন। কিছু প্রশিক্ষক পেশাদার না হয়ে নিজেরাই অনভিজ্ঞ বা হেলপার থেকে চালক হয়েছেন। মুনসুর আলী ডিগ্রী কলেজের সামনেই মা-ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টারের অফিস দেখা গিয়েছে সাধারণ একটা টিন দিয়ে ঘেরা দোকানের মত।

ফলে তৈরি হচ্ছে অদক্ষ চালক, যারা নিয়ম-কানুন না মেনে রাস্তায় গাড়ি চালাচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোচের হেলপার দুই-চার দিন চালকের পাশে থেকে কিছুটা অভিজ্ঞতা নিয়ে গাড়ি চালানো শুরু করে দেন। পরে তারাই হয়ে ওঠেন হাইওয়ে রোডের ‘চালক’। এসব ‘প্লাস্টিক চালক’ রাস্তায় নামলেই ঘটে দুর্ঘটনা।
সাধারণ মানুষের জীবন ও সম্পদ পড়ছে ঝুঁকিতে।

বিআরটি পাবনা সার্কেলের কর্মকর্তা আলতাব হোসেন বলেন,আমরা এসব অবৈধ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালাবো।কেউ যদি সঠিকভাবে অনুমোদন নিয়ে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালাতে চায়,আমরা তাকে সহায়তা করবো।

দক্ষ চালক তৈরি করতে হলে অনুমোদিত ও মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা জরুরি। তা না হলে সড়কে মৃত্যুর মিছিল বন্ধ হবে না।