০১:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এসএসসিতে ১৩০০ নম্বরের মধ্যে ১২৮৫ পেয়েছে চট্টগ্রামের নিবিড় কর্মকার

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:১৬:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
  • ২২ Time View

২০২৫ সালে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এক হাজার ৩০০ নম্বরের মধ্যে এক হাজার ২৮৫ নম্বর পেয়েছেন চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিবিড় কর্মকার (১৬)। তার এমন সাফল্যে খুশি পরিবার ও শিক্ষকরা। ভবিষ্যতে নিবিড় হতে চান প্রকৌশলী।

নিবিড় কর্মকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি যতটুকু পড়েছি মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। আমি নিয়ম করে প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা লেখাপড়া করতাম। ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে বুয়েটে পড়তে আগ্রহী।’

নিবিড় বলেন, ‘ভালো ফল হবে আশা করেছিলাম। তবে নম্বর কেমন আসবে, তা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। নম্বর দেখার পর নিজেরই অনেক ভালো লেগেছে।’

চট্টগ্রাম নগরের আন্দরকিল্লা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় মা-বাবার সঙ্গে থাকেন নিবিড় কর্মকার। বাবা জীবন কর্মকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন, মা রিপা রায় গৃহিণী। নিবিড়ের পৈতৃক বাড়ি নোয়াখালী জেলায়।

তার বাবা জীবন কর্মকার বলেন, ‘আমার ইচ্ছে ছিল ছেলেকে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে পড়ানোর। তবে ভর্তি তালিকায় নাম আসায় তাকে নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করানো হয়। ছেলে নিয়মিত স্কুলের দিকনির্দেশনা মেনেই পড়াশোনা করেছে। শিক্ষকেরা ছিলেন খুব আন্তরিক। ঘরে আমরা শুধু খেয়াল রেখেছি ওর পড়ালেখার পরিবেশটা ঠিক আছে কি না। তবে এসএসসি পরীক্ষার আগে কয়েকটি কোচিংয়ে কেবল মডেল টেস্ট দিয়েছে।’

ছেলের ফলাফল নিয়ে নিবিড়ের মা রিপা রায় বলেন, ‘ওকে কখনও চাপ দিইনি। নিজে থেকেই পড়াশোনায় আগ্রহী ছিল। রচনা প্রতিযোগিতা, অলিম্পিয়াডসহ বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রমেও অংশ নিতো। এসব জায়গায়ও আমরা ওকে উৎসাহ দিয়েছি।’

নিবিড়ের ভালো ফলে উচ্ছ্বসিত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘তার ভালো ফলাফলের পেছনে প্রথমে তার বাবা-মা অনেক কষ্ট করেছে। শিক্ষার্থীও অনেক কষ্ট করেছে। সর্বোপরি আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যে পরিশ্রম করেছে তার কারণে শিক্ষার্থী নিবিড় কর্মকার এ ভালো ফলাফল করেছে।’

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ইলিয়াছ উদ্দিন আহাম্মদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বর্তমানে বোর্ড কর্তৃক প্রথম, দ্বিতীয় কিংবা টপ-টেন, টপ-২০ নির্ধারণ করা হয় না। এসব নির্ধারণ আরও অনেক আগে সরকার বাদ দিয়েছে। চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিবিড় কর্মকার ১৩০০ নম্বরের মধ্যে ১২৮৫ নম্বর পেয়ে দেশের মধ্যে এসএসসিতে প্রথম বলছেন। তবে ১২৮৫ নম্বরই যে প্রথম- এর চেয়ে অন্য বোর্ডে বেশি কেউ পেয়েছে কি না তা আমার জানা নেই।’

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এবার এসএসসিতে পাসের হার ৭২ দশমিক ০৭ শতাংশ। যা গত বছর ছিল ৮২ দশমিক ৮০ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১ হাজার ৮৪৩ জন, গত বছর পেয়েছিল ১০ হাজার ৮২৩ জন। এবার এক লাখ ৪০ হাজার ৩৮৮ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ১ লাখ ১ হাজার ১৮১ জন। এর মধ্যে ছাত্র পাসের হার ৭১ দশমিক ৯৩ এবং ছাত্রী পাসের হার ৭২ দশমিক ১৯ শতাংশ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

News Editor

জনপ্রিয় খবর

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিনে, শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের শুভেচ্ছা

এসএসসিতে ১৩০০ নম্বরের মধ্যে ১২৮৫ পেয়েছে চট্টগ্রামের নিবিড় কর্মকার

Update Time : ০২:১৬:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

২০২৫ সালে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এক হাজার ৩০০ নম্বরের মধ্যে এক হাজার ২৮৫ নম্বর পেয়েছেন চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিবিড় কর্মকার (১৬)। তার এমন সাফল্যে খুশি পরিবার ও শিক্ষকরা। ভবিষ্যতে নিবিড় হতে চান প্রকৌশলী।

নিবিড় কর্মকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি যতটুকু পড়েছি মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। আমি নিয়ম করে প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা লেখাপড়া করতাম। ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে বুয়েটে পড়তে আগ্রহী।’

নিবিড় বলেন, ‘ভালো ফল হবে আশা করেছিলাম। তবে নম্বর কেমন আসবে, তা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। নম্বর দেখার পর নিজেরই অনেক ভালো লেগেছে।’

চট্টগ্রাম নগরের আন্দরকিল্লা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় মা-বাবার সঙ্গে থাকেন নিবিড় কর্মকার। বাবা জীবন কর্মকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন, মা রিপা রায় গৃহিণী। নিবিড়ের পৈতৃক বাড়ি নোয়াখালী জেলায়।

তার বাবা জীবন কর্মকার বলেন, ‘আমার ইচ্ছে ছিল ছেলেকে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে পড়ানোর। তবে ভর্তি তালিকায় নাম আসায় তাকে নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করানো হয়। ছেলে নিয়মিত স্কুলের দিকনির্দেশনা মেনেই পড়াশোনা করেছে। শিক্ষকেরা ছিলেন খুব আন্তরিক। ঘরে আমরা শুধু খেয়াল রেখেছি ওর পড়ালেখার পরিবেশটা ঠিক আছে কি না। তবে এসএসসি পরীক্ষার আগে কয়েকটি কোচিংয়ে কেবল মডেল টেস্ট দিয়েছে।’

ছেলের ফলাফল নিয়ে নিবিড়ের মা রিপা রায় বলেন, ‘ওকে কখনও চাপ দিইনি। নিজে থেকেই পড়াশোনায় আগ্রহী ছিল। রচনা প্রতিযোগিতা, অলিম্পিয়াডসহ বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রমেও অংশ নিতো। এসব জায়গায়ও আমরা ওকে উৎসাহ দিয়েছি।’

নিবিড়ের ভালো ফলে উচ্ছ্বসিত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘তার ভালো ফলাফলের পেছনে প্রথমে তার বাবা-মা অনেক কষ্ট করেছে। শিক্ষার্থীও অনেক কষ্ট করেছে। সর্বোপরি আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যে পরিশ্রম করেছে তার কারণে শিক্ষার্থী নিবিড় কর্মকার এ ভালো ফলাফল করেছে।’

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ইলিয়াছ উদ্দিন আহাম্মদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বর্তমানে বোর্ড কর্তৃক প্রথম, দ্বিতীয় কিংবা টপ-টেন, টপ-২০ নির্ধারণ করা হয় না। এসব নির্ধারণ আরও অনেক আগে সরকার বাদ দিয়েছে। চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিবিড় কর্মকার ১৩০০ নম্বরের মধ্যে ১২৮৫ নম্বর পেয়ে দেশের মধ্যে এসএসসিতে প্রথম বলছেন। তবে ১২৮৫ নম্বরই যে প্রথম- এর চেয়ে অন্য বোর্ডে বেশি কেউ পেয়েছে কি না তা আমার জানা নেই।’

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এবার এসএসসিতে পাসের হার ৭২ দশমিক ০৭ শতাংশ। যা গত বছর ছিল ৮২ দশমিক ৮০ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১ হাজার ৮৪৩ জন, গত বছর পেয়েছিল ১০ হাজার ৮২৩ জন। এবার এক লাখ ৪০ হাজার ৩৮৮ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ১ লাখ ১ হাজার ১৮১ জন। এর মধ্যে ছাত্র পাসের হার ৭১ দশমিক ৯৩ এবং ছাত্রী পাসের হার ৭২ দশমিক ১৯ শতাংশ।