০১:৪২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তুর্কমেনিস্তানের হারিয়ে তিনে তিন বাংলাদেশের

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৯:০০:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫
  • ৩১ Time View

স্রেফ নিয়মরক্ষার ম্যাচেও সেরা একাদশ অপরিবর্তিত রাখলেন কোচ পিটার জেমস বাটলার। শতভাগ জয় দিয়ে উইমেন’স এশিয়ান কাপ বাছাই শেষের তাড়নাও ম্যাচ শুরু হতেই ফুটে উঠল। প্রথমার্ধই সাত গোল করলেন শামসুন্নাহার জুনিয়র-ঋতুপর্ণা চাকমারা। তুর্কমেনিস্তানকে নিয়ে ছেলেখেলা করে বড় জয়ের উচ্ছ্বাসে ভাসল বাংলাদেশ।

মিয়ানমারের ইয়াংগুনে শনিবার ‘সি’ গ্রুপে নিজেদের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে পরে আর জালের দেখা পায়নি কেউ। বাংলাদেশের জয় ৭-০ গোলে। টানা তিন জয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে শীর্ষে থেকে বাছাই শেষ করার চাওয়াও পূরণ হয়েছে জেমস বাটলারের দলের।

দলের জয়ে জোড়া গোল উপহার দেন শামসুন্নাহার জুনিয়র ও ঋতুপর্ণা চাকমা। একবার করে জালের দেখা পান স্বপ্না রানী, মনিকা চাকমা ও তহুরা খাতুন।

বাহরাইনকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে বাছাই শুরুর পর শক্তিশালী মিয়ানমারকে ২-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপে খেলার ইতিহাস আগেই গড়ে বাংলাদেশ। তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি তাই আফঈদা-ঋতুপর্ণাদের জন্য ছিল নিয়মরক্ষার।

বাছাইয়ের শেষটা জয়ে রাঙানোর আশাবাদ মেয়েরা জানিয়েছিল আগেই। শুরুটাও তারা করে দাপটের সাথে। গোল উৎসবের শুরু চতুর্থ মিনিটে। তহুরার কাট ব্যাকে বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শটে লক্ষ্যভেদ করেন স্বপ্না।

দুই মিনিট পরই ব্যবধান হয় দ্বিগুণ। সতীর্থের ক্রসে আফঈদার হেড গোলকিপার ফেরানোর পর, বক্সে জটলার ভেতর থেকে নিখুঁত টোকায় জালে বল জড়ান শামসুন্নাহার জুনিয়র।

ত্রয়োদশ মিনিটে আবারও তুর্কমেনিস্তানের জালে বল। ডান দিক থেকে শামসুন্নাহার সিনিয়রের ক্রস ঝাঁপিয়েও নাগাল পাননি গোলরক্ষক, আলগা বল অনায়াসে জালে পাঠান শামসুন্নাহার জুনিয়র। একটু পরই বক্সের ওপরে বল পেয়ে প্রথম ছোঁয়াল একটু এগিয়ে দৃষ্টিনন্দন শটে স্কোরলাইন ৪-০ করেন মনিকা।

সপ্তদশ মিনিটে বক্সের বেশ বাইরে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে শট নেন ঋতুপর্ণা। বলের লাইনে থাকা গোলরক্ষকের হাত ফসকে বল জড়ায় জালে। এই গোলের পরই আইশা আমানবেরদুয়েভাকে তুলে পোস্ট আগলানোর দায়িত্ব এলনুরা মাকসুয়েতোভাকে দেন তুর্কমেনিস্তান কোচ।

কিন্তু এসেই গোল হজম করেন এলনুরা। আক্রমণ ফিরিয়ে দেওয়ার সুযোগ পেলেও ঠিকঠাক শট নিতে পারেননি তিনি। ছুটে গিয়ে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আড়াআড়ি ক্রস বাড়ান ঋতুপর্ণা। গোলমুখ থেকে দরকারি টোকা দেন তহুরা।

৩৫তম মিনিটে ঋতুপর্ণার শট ক্রসবারের উপরের দিকে লেগে বেরিয়ে যায়। পাঁচ মিনিট পর বক্সের ঠিক ওপর থেকে এই ফরোয়ার্ডের বাম পায়ের শট বাঁক খেয়ে গোলকিপারের গ্লাভস ছুঁয়ে জালে জড়ায়।

প্রথমার্ধেই জয় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় দ্বিতীয়ার্ধে গোলের জন্য মরিয়া ছিল না দল। তরুণদের সুযোগ দিতে তিনটি পরিবর্তন আনেন বাটলার। রুপনা চাকমা, ঋতুপর্ণা ও শিউলি আজিমকে তুলে স্বপ্না রানী মন্ডল, উমহেলা মারমা ও হালিমা আক্তারকে নামান।

এর মধ্যেও সুযোগ আসতে থাকে মাঝেমধ্যে। ৫৭তম মিনিটে বুক দিয়ে বল রিসিভ করে বক্সে ভালো জায়গায় থেকেও শট নিতে পারেননি শামসুন্নাহার জুনিয়র। একটু পর মনিকার দূরপাল্লার শট গ্লাভস গলে বেরিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় আটকান তুর্কমেনিস্তান গোলকিপার।

৬১তম মিনিটে স্বপ্নাকে তুলে শাহেদা আক্তার রিপাকে নামান বাটলার। এরপর শামসুন্নাহার জুনিয়রের বদলি নামেন সুলতানা। ৮০ ও ৮২তম মিনিটে মারিয়া মান্দার দুটি শট আটকান গোলকিপার। বাকিটা সময়ে ব্যবধান বাড়াতে না পারলেও বাংলাদেশের জয়ের আনন্দে ভাটা পড়েনি একটুও।

এশিয়ান কাপের খেলার টিকেট নিশ্চিত করা, টানা তিন ম্যাচ জেতা, ১৬ গোল দিয়ে মাত্র ১টি হজম করার পরিসংখ্যান- সব মিলিয়ে মুঠোভরে পাওয়ার আনন্দ নিয়ে বাছাই শেষ করল বাংলাদেশ। শুরু হলো এশিয়ান কাপের মূল পর্বের অপেক্ষাও। আগামী বছর মার্চে অস্ট্রেলিয়াতে অনুষ্ঠিত হবে মূল লড়াই।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

News Editor

জনপ্রিয় খবর

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিনে, শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের শুভেচ্ছা

তুর্কমেনিস্তানের হারিয়ে তিনে তিন বাংলাদেশের

Update Time : ০৯:০০:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫

স্রেফ নিয়মরক্ষার ম্যাচেও সেরা একাদশ অপরিবর্তিত রাখলেন কোচ পিটার জেমস বাটলার। শতভাগ জয় দিয়ে উইমেন’স এশিয়ান কাপ বাছাই শেষের তাড়নাও ম্যাচ শুরু হতেই ফুটে উঠল। প্রথমার্ধই সাত গোল করলেন শামসুন্নাহার জুনিয়র-ঋতুপর্ণা চাকমারা। তুর্কমেনিস্তানকে নিয়ে ছেলেখেলা করে বড় জয়ের উচ্ছ্বাসে ভাসল বাংলাদেশ।

মিয়ানমারের ইয়াংগুনে শনিবার ‘সি’ গ্রুপে নিজেদের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে পরে আর জালের দেখা পায়নি কেউ। বাংলাদেশের জয় ৭-০ গোলে। টানা তিন জয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে শীর্ষে থেকে বাছাই শেষ করার চাওয়াও পূরণ হয়েছে জেমস বাটলারের দলের।

দলের জয়ে জোড়া গোল উপহার দেন শামসুন্নাহার জুনিয়র ও ঋতুপর্ণা চাকমা। একবার করে জালের দেখা পান স্বপ্না রানী, মনিকা চাকমা ও তহুরা খাতুন।

বাহরাইনকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে বাছাই শুরুর পর শক্তিশালী মিয়ানমারকে ২-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপে খেলার ইতিহাস আগেই গড়ে বাংলাদেশ। তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি তাই আফঈদা-ঋতুপর্ণাদের জন্য ছিল নিয়মরক্ষার।

বাছাইয়ের শেষটা জয়ে রাঙানোর আশাবাদ মেয়েরা জানিয়েছিল আগেই। শুরুটাও তারা করে দাপটের সাথে। গোল উৎসবের শুরু চতুর্থ মিনিটে। তহুরার কাট ব্যাকে বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শটে লক্ষ্যভেদ করেন স্বপ্না।

দুই মিনিট পরই ব্যবধান হয় দ্বিগুণ। সতীর্থের ক্রসে আফঈদার হেড গোলকিপার ফেরানোর পর, বক্সে জটলার ভেতর থেকে নিখুঁত টোকায় জালে বল জড়ান শামসুন্নাহার জুনিয়র।

ত্রয়োদশ মিনিটে আবারও তুর্কমেনিস্তানের জালে বল। ডান দিক থেকে শামসুন্নাহার সিনিয়রের ক্রস ঝাঁপিয়েও নাগাল পাননি গোলরক্ষক, আলগা বল অনায়াসে জালে পাঠান শামসুন্নাহার জুনিয়র। একটু পরই বক্সের ওপরে বল পেয়ে প্রথম ছোঁয়াল একটু এগিয়ে দৃষ্টিনন্দন শটে স্কোরলাইন ৪-০ করেন মনিকা।

সপ্তদশ মিনিটে বক্সের বেশ বাইরে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে শট নেন ঋতুপর্ণা। বলের লাইনে থাকা গোলরক্ষকের হাত ফসকে বল জড়ায় জালে। এই গোলের পরই আইশা আমানবেরদুয়েভাকে তুলে পোস্ট আগলানোর দায়িত্ব এলনুরা মাকসুয়েতোভাকে দেন তুর্কমেনিস্তান কোচ।

কিন্তু এসেই গোল হজম করেন এলনুরা। আক্রমণ ফিরিয়ে দেওয়ার সুযোগ পেলেও ঠিকঠাক শট নিতে পারেননি তিনি। ছুটে গিয়ে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আড়াআড়ি ক্রস বাড়ান ঋতুপর্ণা। গোলমুখ থেকে দরকারি টোকা দেন তহুরা।

৩৫তম মিনিটে ঋতুপর্ণার শট ক্রসবারের উপরের দিকে লেগে বেরিয়ে যায়। পাঁচ মিনিট পর বক্সের ঠিক ওপর থেকে এই ফরোয়ার্ডের বাম পায়ের শট বাঁক খেয়ে গোলকিপারের গ্লাভস ছুঁয়ে জালে জড়ায়।

প্রথমার্ধেই জয় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় দ্বিতীয়ার্ধে গোলের জন্য মরিয়া ছিল না দল। তরুণদের সুযোগ দিতে তিনটি পরিবর্তন আনেন বাটলার। রুপনা চাকমা, ঋতুপর্ণা ও শিউলি আজিমকে তুলে স্বপ্না রানী মন্ডল, উমহেলা মারমা ও হালিমা আক্তারকে নামান।

এর মধ্যেও সুযোগ আসতে থাকে মাঝেমধ্যে। ৫৭তম মিনিটে বুক দিয়ে বল রিসিভ করে বক্সে ভালো জায়গায় থেকেও শট নিতে পারেননি শামসুন্নাহার জুনিয়র। একটু পর মনিকার দূরপাল্লার শট গ্লাভস গলে বেরিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় আটকান তুর্কমেনিস্তান গোলকিপার।

৬১তম মিনিটে স্বপ্নাকে তুলে শাহেদা আক্তার রিপাকে নামান বাটলার। এরপর শামসুন্নাহার জুনিয়রের বদলি নামেন সুলতানা। ৮০ ও ৮২তম মিনিটে মারিয়া মান্দার দুটি শট আটকান গোলকিপার। বাকিটা সময়ে ব্যবধান বাড়াতে না পারলেও বাংলাদেশের জয়ের আনন্দে ভাটা পড়েনি একটুও।

এশিয়ান কাপের খেলার টিকেট নিশ্চিত করা, টানা তিন ম্যাচ জেতা, ১৬ গোল দিয়ে মাত্র ১টি হজম করার পরিসংখ্যান- সব মিলিয়ে মুঠোভরে পাওয়ার আনন্দ নিয়ে বাছাই শেষ করল বাংলাদেশ। শুরু হলো এশিয়ান কাপের মূল পর্বের অপেক্ষাও। আগামী বছর মার্চে অস্ট্রেলিয়াতে অনুষ্ঠিত হবে মূল লড়াই।