১০:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চীনা ব্যবসায়ীদের সফরে নতুন আশা দেখছেন বিডা চেয়ারম্যান

“আমরা একটি চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য ইতোমধ্যেই দেশটির সাথে কাজ করছি,” বলেন তিনি।

চীনা ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশ সফরে বিনিয়োগে নতুন আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।

তিনি বলেছেন, “এত বড় প্রতিনিধি দল, একটা দেশ থেকে আমরা আগে কখনো দেখিনি। আমরা একটা নতুন আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। আমরা একটা নতুন মাত্রার আগ্রহ চীনা বিনিয়োগকারীদের থেকে দেখতে পাচ্ছি। সেই আগ্রহের ফলাফল হিসেবে আমরা এই গ্রুপটাকে পেলাম।”

রোববার ঢাকার আগারগাঁওয়ে বিডা কার্যালয়ে ‘চীন-বাংলাদেশ বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্মেলন’ শেষে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন চৌধুরী আশিক।

শনিবার চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীর একটি দল নিয়ে তিন দিনের সফরে দুপুরে ঢাকায় পৌঁছান।

বিডা চেয়ারম্যান বলেন, “আজকে সর্বমোট চীনের ১৪৩টি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২৫০ জন বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ছিলেন। বাংলাদেশেরও অনেক ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী ছিলেন। সবমিলিয়ে প্রায় ৫০০ এর মতো অতিথি অংশ নিয়েছেন।

“চীনের যে কোম্পানিগুলো এসেছিল, তাদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন খাতে বেশ বড় ধরনের কোম্পানি। আজ বেশ কিছু বিটুবি এবং বিটুজি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।”

দিনভর ওই প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ১৫০টির বেশি বৈঠক হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা তাদের এই সহায়তাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি, যাতে আমাদের যারা বাংলাদেশি ভালো ব্যবসায়ী বেসরকারি খাতে, তাদের সাথে যাতে ওনারা (চীনা ব্যবসায়ীরা) যৌথ উদ্যোগ বা অংশীদারিত্ব যেতে পারেন। প্রায় ১৫০টির বেশি এ ধরনের বৈঠক হয়েছে আজকে।”

চীনের সঙ্গে একটি দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে বলেও জানান বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, ”আমরা একটা দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছি ‘পাওয়ার চায়না’র সাথে অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের। চাঁদপুরের একটা কৃষিভিত্তিক প্রকল্পের জন্য সমঝোতা স্মারকটা স্বাক্ষরিত হয়েছে। অনেকদিন ধরেই এটা নিয়ে কাজ হচ্ছিল, কিন্তু আমরা সরকারে এসে দেখলাম প্রকল্পটা ঝুলে আছে। বেশ কিছু সিদ্ধান্তের কারণে প্রকল্পটা এগোচ্ছিল না।”

চৌধুরী আশিক বলেন, “এখন ওখানে ওনারা গিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে প্রকল্পটা দেখবেন। আশা করছি, সেখানে বেশ কিছু মানুষের কর্মসংস্থানও হবে। বিশেষ করে নারীদের। ধীরে-ধীরে সেখানে কর্মসংস্থান আরও বাড়বে। সব মিলিয়ে আমরা মনে করছি এই সফরটা আমাদের জন্য একটা মাইলফলক, একটা ঐতিহাসিক সফর।”

তবে বিনিয়োগ নিয়ে আসা একটা লম্বা প্রক্রিয়া মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমি কারও কাছে প্রত্যাশা করি না যে ওনারা আজকেই একটা বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাবেন। আমরা এটা আগেও অনেকবার বলেছি। বিনিয়োগের যাত্রাটা একটা লম্বা প্রক্রিয়া।

“তো সেটার প্রথম ধাপটা হচ্ছে ওনাদের বাংলাদেশে নিয়ে আসা। বাংলাদেশের পরিবেশের সাথে পরিচিত করানো। আমাদের সাথে পরিচিত হওয়া, ব্যবসায়ীদের সাথে পরিচিত হওয়া। ব্যাংক, আইনি প্রতিষ্ঠান, কর নীতিনির্ধারকদের সাথে পরিচিত হওয়া এবং কিছু কারখানা পরিদর্শন করা, যেটা ওনারা কালকে করবেন।”

আগামী ছয় মাস থেকে দুই বছরের মধ্যে কিছু সত্যিকারের বিনিয়োগের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বিডা চেয়ারম্যান বলেন, “বাংলাদেশে যেসব চীনা ব্যবসায়ী ইতোমধ্যেই আছেন, সফলতার সাথে ব্যবসা করছেন তাদেরও ওনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কারণ, তারাই এখানে আমাদের বড় প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে একটা ভূমিকা রাখতে পারেন।

“ওনারা যাতে এটা সম্পর্কে ধারণা পান যে কেন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে হবে। আমরা আশা করছি, এই সম্মেলন থেকে আমরা যে যোগাযোগগুলো পাব, সেগুলোকে পরিচর্যা করতে করতে আগামী ছয়, ১২, ১৮, ২৪ মাসে কিছু সত্যিকারের বিনিয়োগ আমরা বাংলাদেশে দেখতে পাব।”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা একটি চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য ইতোমধ্যেই দেশটির সাথে কাজ করছি। আমরা মনে করছি এটাই ওনাদের জন্য বাংলাদেশে বিনিয়োগের পথকে সুগম করবে।”

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Khaled Hossain

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিসিবি পরিচালক আসিফ আকবর

চীনা ব্যবসায়ীদের সফরে নতুন আশা দেখছেন বিডা চেয়ারম্যান

Update Time : ০৭:৫৮:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫

“আমরা একটি চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য ইতোমধ্যেই দেশটির সাথে কাজ করছি,” বলেন তিনি।

চীনা ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশ সফরে বিনিয়োগে নতুন আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।

তিনি বলেছেন, “এত বড় প্রতিনিধি দল, একটা দেশ থেকে আমরা আগে কখনো দেখিনি। আমরা একটা নতুন আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। আমরা একটা নতুন মাত্রার আগ্রহ চীনা বিনিয়োগকারীদের থেকে দেখতে পাচ্ছি। সেই আগ্রহের ফলাফল হিসেবে আমরা এই গ্রুপটাকে পেলাম।”

রোববার ঢাকার আগারগাঁওয়ে বিডা কার্যালয়ে ‘চীন-বাংলাদেশ বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্মেলন’ শেষে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন চৌধুরী আশিক।

শনিবার চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীর একটি দল নিয়ে তিন দিনের সফরে দুপুরে ঢাকায় পৌঁছান।

বিডা চেয়ারম্যান বলেন, “আজকে সর্বমোট চীনের ১৪৩টি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২৫০ জন বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ছিলেন। বাংলাদেশেরও অনেক ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী ছিলেন। সবমিলিয়ে প্রায় ৫০০ এর মতো অতিথি অংশ নিয়েছেন।

“চীনের যে কোম্পানিগুলো এসেছিল, তাদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন খাতে বেশ বড় ধরনের কোম্পানি। আজ বেশ কিছু বিটুবি এবং বিটুজি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।”

দিনভর ওই প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ১৫০টির বেশি বৈঠক হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা তাদের এই সহায়তাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি, যাতে আমাদের যারা বাংলাদেশি ভালো ব্যবসায়ী বেসরকারি খাতে, তাদের সাথে যাতে ওনারা (চীনা ব্যবসায়ীরা) যৌথ উদ্যোগ বা অংশীদারিত্ব যেতে পারেন। প্রায় ১৫০টির বেশি এ ধরনের বৈঠক হয়েছে আজকে।”

চীনের সঙ্গে একটি দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে বলেও জানান বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, ”আমরা একটা দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছি ‘পাওয়ার চায়না’র সাথে অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের। চাঁদপুরের একটা কৃষিভিত্তিক প্রকল্পের জন্য সমঝোতা স্মারকটা স্বাক্ষরিত হয়েছে। অনেকদিন ধরেই এটা নিয়ে কাজ হচ্ছিল, কিন্তু আমরা সরকারে এসে দেখলাম প্রকল্পটা ঝুলে আছে। বেশ কিছু সিদ্ধান্তের কারণে প্রকল্পটা এগোচ্ছিল না।”

চৌধুরী আশিক বলেন, “এখন ওখানে ওনারা গিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে প্রকল্পটা দেখবেন। আশা করছি, সেখানে বেশ কিছু মানুষের কর্মসংস্থানও হবে। বিশেষ করে নারীদের। ধীরে-ধীরে সেখানে কর্মসংস্থান আরও বাড়বে। সব মিলিয়ে আমরা মনে করছি এই সফরটা আমাদের জন্য একটা মাইলফলক, একটা ঐতিহাসিক সফর।”

তবে বিনিয়োগ নিয়ে আসা একটা লম্বা প্রক্রিয়া মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমি কারও কাছে প্রত্যাশা করি না যে ওনারা আজকেই একটা বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাবেন। আমরা এটা আগেও অনেকবার বলেছি। বিনিয়োগের যাত্রাটা একটা লম্বা প্রক্রিয়া।

“তো সেটার প্রথম ধাপটা হচ্ছে ওনাদের বাংলাদেশে নিয়ে আসা। বাংলাদেশের পরিবেশের সাথে পরিচিত করানো। আমাদের সাথে পরিচিত হওয়া, ব্যবসায়ীদের সাথে পরিচিত হওয়া। ব্যাংক, আইনি প্রতিষ্ঠান, কর নীতিনির্ধারকদের সাথে পরিচিত হওয়া এবং কিছু কারখানা পরিদর্শন করা, যেটা ওনারা কালকে করবেন।”

আগামী ছয় মাস থেকে দুই বছরের মধ্যে কিছু সত্যিকারের বিনিয়োগের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বিডা চেয়ারম্যান বলেন, “বাংলাদেশে যেসব চীনা ব্যবসায়ী ইতোমধ্যেই আছেন, সফলতার সাথে ব্যবসা করছেন তাদেরও ওনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কারণ, তারাই এখানে আমাদের বড় প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে একটা ভূমিকা রাখতে পারেন।

“ওনারা যাতে এটা সম্পর্কে ধারণা পান যে কেন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে হবে। আমরা আশা করছি, এই সম্মেলন থেকে আমরা যে যোগাযোগগুলো পাব, সেগুলোকে পরিচর্যা করতে করতে আগামী ছয়, ১২, ১৮, ২৪ মাসে কিছু সত্যিকারের বিনিয়োগ আমরা বাংলাদেশে দেখতে পাব।”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা একটি চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য ইতোমধ্যেই দেশটির সাথে কাজ করছি। আমরা মনে করছি এটাই ওনাদের জন্য বাংলাদেশে বিনিয়োগের পথকে সুগম করবে।”