০৭:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অনাহারের ঝুঁকিতে গাজার সাংবাদিকরা, বিবিসি ও সংবাদ সংস্থাগুলোর সতর্কতা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৭:৩২:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫
  • ১৬ Time View

গাজায় কর্মরত সাংবাদিকরা নিজেদের ও পরিবারের খাবার জোগাড় করতে না পারার ঝুঁকিতে রয়েছেন। বুধবার (২৩ জুলাই) বিবিসি নিউজসহ বিশ্বের তিনটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদ সংস্থা- অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি), এজেন্স ফ্রান্স- প্রেস (এএফপি) এবং রয়টার্স এক বিরল যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজায় সাংবাদিকদের পরিস্থিতি নিয়ে তারা ‘চরমভাবে উদ্বিগ্ন’। বিশেষ করে যখন গাজায় গণঅনাহারের ব্যাপারে ব্যাপকভাবে সতর্কতা জারি হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “যারা গাজার যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে সংযবাদ বা প্রতিবেদন করেছেন, তারাও এখন সেই একই চরম দুর্দশার মুখে পড়েছেন, যা তারা খবর করছেন।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “অনেক মাস ধরে এই স্বাধীন সাংবাদিকরাই গাজায় মাটির কাছাকাছি থেকে বিশ্ববাসীর চোখ ও কান হয়ে কাজ করছেন। তারা এখন দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন।”

তারা সতর্ক করে জানিয়েছে, গাজার সাংবাদিকরা ‘দিন দিন নিজেদের ও পরিবারের খাবার জোগাড় করতেও অক্ষম হয়ে পড়ছেন।’

আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলো গাজার স্থানীয় সাংবাদিকদের ওপর নির্ভর করে প্রতিবেদন সংগ্রহ করে। কারণ ইসরায়েল আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেয় না। এমনকি বিবিসিকেও নয়।

এদিকে শতাধিক আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠন গাজায় গণদুর্ভিক্ষের আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করেছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয় “যুদ্ধক্ষেত্রে সাংবাদিকরা বহু কষ্ট ও বঞ্চনার মধ্যে কাজ করেন। তবে এখন অনাহারের হুমকিও তাদের জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে, যা আমাদের গভীরভাবে শঙ্কিত করেছে।”

“আমরা আবারও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি, যেন গাজার ভেতরে ও বাইরে সাংবাদিকদের চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। সেখানকার মানুষের কাছে পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।”

এদিকে আরেকটি যৌথ বিবৃতিতে এমএসএফ, সেভ দ্য চিলড্রেন ও অক্সফাম জানিয়েছে, তাদের সহকর্মীরা এবং গাজার সাধারণ মানুষ ‘ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যাচ্ছেন’।

তবে ইসরায়েল, যাদের নিয়ন্ত্রণে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ করে, তারা এই সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে ‘হামাসের প্রচারমাধ্যম হিসেবে কাজ করার’ অভিযোগ তুলেছে।

গাজার হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, রবিবার থেকে এখন পর্যন্ত অপুষ্টির কারণে ৪৫ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন।

ইসরায়েল গত মার্চের শুরুর দিকে দুই মাসের যুদ্ধবিরতির পর গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।

প্রায় দুই মাস পর অবরোধ আংশিকভাবে শিথিল করা হলেও খাদ্য ও ওষুধের সংকট আরও বেড়ে গেছে।

ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র মিলে ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ) নামে একটি বিতর্কিত নতুন ত্রাণ ব্যবস্থার সূচনা করেছে।

গত আট সপ্তাহে জিএইচএফের ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোর আশপাশে শত শত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, গাজার এক চতুর্থাংশ মানুষ দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

News Editor

জনপ্রিয় খবর

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিনে, শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের শুভেচ্ছা

অনাহারের ঝুঁকিতে গাজার সাংবাদিকরা, বিবিসি ও সংবাদ সংস্থাগুলোর সতর্কতা

Update Time : ০৭:৩২:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫

গাজায় কর্মরত সাংবাদিকরা নিজেদের ও পরিবারের খাবার জোগাড় করতে না পারার ঝুঁকিতে রয়েছেন। বুধবার (২৩ জুলাই) বিবিসি নিউজসহ বিশ্বের তিনটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদ সংস্থা- অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি), এজেন্স ফ্রান্স- প্রেস (এএফপি) এবং রয়টার্স এক বিরল যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজায় সাংবাদিকদের পরিস্থিতি নিয়ে তারা ‘চরমভাবে উদ্বিগ্ন’। বিশেষ করে যখন গাজায় গণঅনাহারের ব্যাপারে ব্যাপকভাবে সতর্কতা জারি হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “যারা গাজার যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে সংযবাদ বা প্রতিবেদন করেছেন, তারাও এখন সেই একই চরম দুর্দশার মুখে পড়েছেন, যা তারা খবর করছেন।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “অনেক মাস ধরে এই স্বাধীন সাংবাদিকরাই গাজায় মাটির কাছাকাছি থেকে বিশ্ববাসীর চোখ ও কান হয়ে কাজ করছেন। তারা এখন দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন।”

তারা সতর্ক করে জানিয়েছে, গাজার সাংবাদিকরা ‘দিন দিন নিজেদের ও পরিবারের খাবার জোগাড় করতেও অক্ষম হয়ে পড়ছেন।’

আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলো গাজার স্থানীয় সাংবাদিকদের ওপর নির্ভর করে প্রতিবেদন সংগ্রহ করে। কারণ ইসরায়েল আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেয় না। এমনকি বিবিসিকেও নয়।

এদিকে শতাধিক আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠন গাজায় গণদুর্ভিক্ষের আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করেছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয় “যুদ্ধক্ষেত্রে সাংবাদিকরা বহু কষ্ট ও বঞ্চনার মধ্যে কাজ করেন। তবে এখন অনাহারের হুমকিও তাদের জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে, যা আমাদের গভীরভাবে শঙ্কিত করেছে।”

“আমরা আবারও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি, যেন গাজার ভেতরে ও বাইরে সাংবাদিকদের চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। সেখানকার মানুষের কাছে পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।”

এদিকে আরেকটি যৌথ বিবৃতিতে এমএসএফ, সেভ দ্য চিলড্রেন ও অক্সফাম জানিয়েছে, তাদের সহকর্মীরা এবং গাজার সাধারণ মানুষ ‘ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যাচ্ছেন’।

তবে ইসরায়েল, যাদের নিয়ন্ত্রণে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ করে, তারা এই সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে ‘হামাসের প্রচারমাধ্যম হিসেবে কাজ করার’ অভিযোগ তুলেছে।

গাজার হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, রবিবার থেকে এখন পর্যন্ত অপুষ্টির কারণে ৪৫ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন।

ইসরায়েল গত মার্চের শুরুর দিকে দুই মাসের যুদ্ধবিরতির পর গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।

প্রায় দুই মাস পর অবরোধ আংশিকভাবে শিথিল করা হলেও খাদ্য ও ওষুধের সংকট আরও বেড়ে গেছে।

ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র মিলে ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ) নামে একটি বিতর্কিত নতুন ত্রাণ ব্যবস্থার সূচনা করেছে।

গত আট সপ্তাহে জিএইচএফের ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোর আশপাশে শত শত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, গাজার এক চতুর্থাংশ মানুষ দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি।