০৮:০৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফিলিস্তিনিদের ‘মানবিক নগরে’ স্থানান্তর পরিকল্পনা নিয়ে ইসরায়েলে মতপার্থক্য

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:১৫:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫
  • ২৪ Time View

লাখ লাখ ফিলিস্তিনিকে উৎখাত করে কথিত ‘মানবিক নগরে’ (হিউম্যানিটারিয়ান সিটি) স্থানান্তরের ইসরায়েলি প্রস্তাব নিয়ে দেশটির সামরিক ও রাজনৈতিক গোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। তবে এই স্থানান্তরের বিষয়ে বাস্তবসম্মত একটি পরিকল্পনা এখনও দাঁড় করানো হয়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

এই প্রস্তাবের সমালোচকরা পরিকল্পনার খসড়া ছাড়াই পুরো বিষয়টিকে ‘কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের’ সঙ্গে তুলনা করে খারিজ করে দিয়েছেন। তাদের দাবি, এই প্রস্তাব গৃহীত হলে গাজায় জাতিগত নিধন শুরু হবে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রশাসন এই পরিকল্পনার পক্ষে যুক্তি দিয়েছে, এটি একদিকে বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় দেবে এবং অন্যদিকে হামাসের নিয়ন্ত্রণ দুর্বল করবে। তবে এটি এখনও সরকারিভাবে গৃহীত নীতিতে রূপ নিয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়।

দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাতজ চলতি মাসের শুরুতে এই ধারণা উত্থাপন করেন এবং রবিবার রাতে নেতানিয়াহু মন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে এটি নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে সেনাবাহিনী একটি প্রাথমিক পরিকল্পনা উপস্থাপন করলেও নেতানিয়াহু তা অত্যধিক ব্যয়বহুল ও জটিল বলে নাকচ করে দেন। বৈঠকে উপস্থিত দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তিনি কর্মকর্তাদের অল্প সময় ও কম খরচে বাস্তবায়নযোগ্য বিকল্প বের করতে বলেন।

একজন সেনা কর্মকর্তা জানান, এটি একটি জটিল উদ্যোগ এবং পয়ঃনিষ্কাশন, চিকিৎসা, পানি ও খাদ্য সরবরাহসহ প্রাথমিক অবকাঠামোর জন্য জটিল লজিস্টিকস প্রয়োজন হবে।

পরিকল্পনাটি এখনও একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি দাবি করেন, হামাসের শাসন থেকে মুক্ত হতে ইচ্ছুক ফিলিস্তিনিদের সহায়তা করাই এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য।

কয়েকজন বিশ্লেষক অবশ্য ধারণা করছেন, এই পরিকল্পনার প্রকৃত উদ্দেশ্য হতে পারে চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনা চলাকালে হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করা এবং একই সঙ্গে মন্ত্রিসভার ডানপন্থি সদস্যদের সন্তুষ্ট রাখা, যারা যেকোনও ধরনের যুদ্ধবিরতির বিরোধিতা করছেন।

এই প্রতিবেদনের জন্য রয়টার্সের পক্ষ থেকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী ও সেনাবাহিনীর দফতরে যোগাযোগ করে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। এছাড়া, হামাসও রয়টার্সের অনুরোধে কোনও মন্তব্য করেনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

News Editor

জনপ্রিয় খবর

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিনে, শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের শুভেচ্ছা

ফিলিস্তিনিদের ‘মানবিক নগরে’ স্থানান্তর পরিকল্পনা নিয়ে ইসরায়েলে মতপার্থক্য

Update Time : ১২:১৫:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫

লাখ লাখ ফিলিস্তিনিকে উৎখাত করে কথিত ‘মানবিক নগরে’ (হিউম্যানিটারিয়ান সিটি) স্থানান্তরের ইসরায়েলি প্রস্তাব নিয়ে দেশটির সামরিক ও রাজনৈতিক গোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। তবে এই স্থানান্তরের বিষয়ে বাস্তবসম্মত একটি পরিকল্পনা এখনও দাঁড় করানো হয়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

এই প্রস্তাবের সমালোচকরা পরিকল্পনার খসড়া ছাড়াই পুরো বিষয়টিকে ‘কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের’ সঙ্গে তুলনা করে খারিজ করে দিয়েছেন। তাদের দাবি, এই প্রস্তাব গৃহীত হলে গাজায় জাতিগত নিধন শুরু হবে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রশাসন এই পরিকল্পনার পক্ষে যুক্তি দিয়েছে, এটি একদিকে বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় দেবে এবং অন্যদিকে হামাসের নিয়ন্ত্রণ দুর্বল করবে। তবে এটি এখনও সরকারিভাবে গৃহীত নীতিতে রূপ নিয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়।

দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাতজ চলতি মাসের শুরুতে এই ধারণা উত্থাপন করেন এবং রবিবার রাতে নেতানিয়াহু মন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে এটি নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে সেনাবাহিনী একটি প্রাথমিক পরিকল্পনা উপস্থাপন করলেও নেতানিয়াহু তা অত্যধিক ব্যয়বহুল ও জটিল বলে নাকচ করে দেন। বৈঠকে উপস্থিত দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তিনি কর্মকর্তাদের অল্প সময় ও কম খরচে বাস্তবায়নযোগ্য বিকল্প বের করতে বলেন।

একজন সেনা কর্মকর্তা জানান, এটি একটি জটিল উদ্যোগ এবং পয়ঃনিষ্কাশন, চিকিৎসা, পানি ও খাদ্য সরবরাহসহ প্রাথমিক অবকাঠামোর জন্য জটিল লজিস্টিকস প্রয়োজন হবে।

পরিকল্পনাটি এখনও একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি দাবি করেন, হামাসের শাসন থেকে মুক্ত হতে ইচ্ছুক ফিলিস্তিনিদের সহায়তা করাই এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য।

কয়েকজন বিশ্লেষক অবশ্য ধারণা করছেন, এই পরিকল্পনার প্রকৃত উদ্দেশ্য হতে পারে চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনা চলাকালে হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করা এবং একই সঙ্গে মন্ত্রিসভার ডানপন্থি সদস্যদের সন্তুষ্ট রাখা, যারা যেকোনও ধরনের যুদ্ধবিরতির বিরোধিতা করছেন।

এই প্রতিবেদনের জন্য রয়টার্সের পক্ষ থেকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী ও সেনাবাহিনীর দফতরে যোগাযোগ করে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। এছাড়া, হামাসও রয়টার্সের অনুরোধে কোনও মন্তব্য করেনি।